
রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:-আবারও অশান্ত রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। সোমবারের পর মঙ্গলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে – এই বিক্ষোভে যাঁরা সামিল হয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য ও সমর্থক। এছাড়াও, অশিক্ষক কর্মীদের একাংশ তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
কিন্তু, কী কারণে বারবার অশান্তি ছড়াচ্ছে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে? এক্ষেত্রে মূল ইস্যু বা অভিযোগ মূলত দু’টি। প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায় নাকি নিজের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ পরিচালনা করছেন! এবং এই সংক্রান্ত বিভিন্ন অনিয়মে তাঁকে মদত দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী রেজিস্ট্রার! এমনকী, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া থেকে শুরু করে অধ্যাপক ও অধ্যাপিকা এবং অশিক্ষক কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছেন বলেও দাবি করা হচ্ছে বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে।
দ্বিতীয়ত, এই প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্থ ও স্বাভাবিক পঠনপাঠনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। এবং সেইসঙ্গে পঠনপাঠনের স্বাভাবিক পরিবেশ ফেরাতে অবিলম্বে স্থায়ী উপাচার্য এবং স্থায়ী রেজিস্ট্রার নিয়োগের দাবি তোলা হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসের ভিতরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পড়ুয়াদের একাংশ। তাঁদের একটা অংশ অস্থায়ী উপাচার্যের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন এবং সেই বন্ধ দরজার সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে বসে পড়েন। সমানে চলতে থাকে স্লোগানিং। এর পাশাপাশি, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের দু’টি ফটকের সামনেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়।
এর আগে সোমবারও একই ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু, সেদিন উপাচার্য তাঁর অফিসে ঢুকতে পেরেছিলেন এবং নিজের কাজ শুরু করতে পেরেছিলেন। কিন্তু, এদিন উপাচার্য পৌঁছানোর আগেই তাঁর ঘরে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতর পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সোমবার যখন তাঁরা আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন, সেই সময় অস্থায়ী উপাচার্য নিরাপত্তারক্ষীদের দিয়ে বিক্ষোভকারীদের বাইরে বের করে দরজা বন্ধ করে দেন। মঙ্গলবার সেই আচরণেরও প্রতিবাদ জানান বিক্ষোভকারীরা।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে শুভ্রকমলকে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তারপর থেকেই তাঁকে ঘিরে নানা সময় নানা অভিযোগ তুলে পড়ুয়াদের একাংশ বিক্ষোভ, প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বি টি রোড ক্যাম্পাসেও বিক্ষোভ হয়েছিল। সেই সময় ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য এবং অস্থায়ী রেজিস্ট্রারকে বেশ কয়েকবার বিক্ষোভকারীদের সম্মুখে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু, তারপরও অশান্তি সমূলে দূর হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যায়নি।
Be the first to comment