জীবনে জুড়েছিল আরেক জীবন। একে অন্যের পাশে থেকে হেঁটে যাওয়ার কথা ছিল অনেকটা পথ। কিন্তু মাঝপথে সফর শেষ। উজ্জ্বল রঙিন প্রেমের স্বপ্ন থেকে এক নিমেষে সাদাকালো ফ্রেমে বান্ধবী – ঐন্দ্রিলার পাশাপাশি শেষ হল সব্যসাচীর লড়াইটাও। একান্ত আপন মানুষটা আজ আর নেই। শনিবার রাতেই নিজের সব পোস্ট ডিলিট করেন অভিনেতা। আশঙ্কার কালো মেঘ তখনই জমেছিল। রবিবার দুপুরে থেমে গেল সব। বাস্তবের কাঠিন্যের কাছে হার মানল রূপকথার মতো তৈরি হওয়া প্রেমের গল্পটা।
চলে গেলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা, হেরে গেলেন সব্যসাচী চৌধুরী। সোশ্যাল মিডিয়ায় সব্যসাচী বারবার নেটিজেনদের উদ্দেশ্য জানিয়েছিলেন প্রত্যেকে যেন প্রার্থনা করেন ঐন্দ্রিলার জন্য। আবার কখনও প্রকাশ পেয়েছে তাঁর ক্ষোভ। বুধবার রাতে যখন ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে যখন ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পরে তখন তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়ে ফেসবুকে বলেছিলেন, “ওকে আর একটু থাকতে দিন, এসব না হয় পরে লিখবেন।” শুক্রবার বলেছিলেন ” রাখে বড়মা, তো মারে কে…”। তবে শনিবার রাতে হঠাৎই ঐন্দ্রিলার পরপর ১০ বার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পরই ফেসবুক থেকে ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে লেখা সমস্ত পোস্ট মুছে দেন সব্যসাচী। তাহলে কি হৃদয়ের টান থেকে কোথাও অনুভব করেছিলেন লড়াইয়ের পালা এবার শেষ? ২০১৫ সালে ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে ঐন্দ্রিলার ছায়াসঙ্গী হয়ে থেকে গেছেন।
নার্সিংহোমে ভর্তি থাকার সময় শুটিং থাকলেও দ্রুত শেষ করে ঐন্দ্রিলার পাশে ছুটে গেছেন তিনি। দিল্লীতে চিকিৎসা চলার সময়ও এক বারের জন্যও কাছ ছাড়া করেননি তিনি।সব্যসাচীর কথায় বারবার উঠে এসেছে প্রাণ শক্তিতে ভরপুর ঐন্দ্রিলার কথা। জীবনকে বড্ড ভালোবাসতেন অভিনেত্রী। জন্মদিনে নিজেই বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়স্বজনদের নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতেন। প্রত্যেক মুহূর্তে তাঁকে অনুপ্রেরণা যুগিয়ে গেছেন সব্যসাচীও। আজ তিনি নির্বাক। একটি কথাও শোনা যায়নি তাঁর থেকে। যাঁর জন্য এত কিছু সে আজ নেই। কিন্তু মানুষ জীবন থেকে চলে গেলে কি অনুভূতিগুলোও চলে যায়? হয়তো যায় বা হয়তো যায় না। সময়ের সঙ্গে সেই ক্ষতে প্রলেপ পড়ে। তবু দাগ থেকে যায়, থেকে যায় ভালোবাসার মূহূর্তরা।সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলার গল্পের মুহূর্তগুলো যেমন থেকে যাবে। কারণ, সেই রূপকথার সঙ্গে ঘর করেছেন আরও অনেকে। স্যোশাল মিডিয়া জুড়ে আজ শুধু সেই আলাপচারিতা।
Be the first to comment