প্রতীকী ছবি,
স্নান করা, কাপড় কাচা, বাসনপত্র ধোয়া এমনকি গৃহপালিত পশুকে স্নান করানো সব কাজই একটি মাত্র পুকুরে। কুয়ো দুয়েকটা আছে, তবে তার জলও তথৈবচ। এই পরিস্থিতিতেই ,অযোধ্যার পাহাড়তলিতে ঘরে ঘরে ডায়েরিয়া ছড়ানোয় উদ্বেগ বাড়ছে বাসিন্দাদের। জেলার এই প্রান্তিক এলাকার ১৩৫ জন ডায়েরিয়া নিয়ে স্থানীয় কোরেং প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি রয়েছেন l এই ঘটনায় চিন্তিত ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকও।
বাঘমুন্ডি থানার কুশলডি গ্রাম। অযোধ্যা পাহাড়ের কোলে অবস্থিত এই প্রত্যন্ত গ্রামে গত দু সপ্তাহ ধরে ঘরে ঘরে ছড়াচ্ছে ডায়েরিয়া। আট থেকে আশি বাদ নেই কেউ। গ্রামের বাসিন্দা রেখা কুমার, অবনী কুমার, কমলাবালা মাহাতোরা জানিয়েছেন, পুকুরের জল এবং কুয়োর জল ব্যবহারের ফলেই এই রোগ ছড়িয়েছে। স্নান করা, কাপড় কাচা, বাসনপত্র ধোয়া এমনকি গৃহপালিত পশুকে স্নান সবের জন্যই তাঁদের ভরসা এলাকার একমাত্র পুকুর। আবার পানীয় জল বলতেও সেই পুকুরই। গ্রামে যে দু-একটি কুয়ো আছে তার জলও পানের অযোগ্য।
গ্রামবাসীদের আরও অভিযোগ, রাস্তায় খাল ডোবায় বর্ষার জল জমছে। ড্রেন অপরিষ্কার থাকায় জল আটকে রয়েছে । এতে মশামাছির উপদ্রব বেড়ে গেছে। এরফলে এই রোগ আরও ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে।
বাঘমুন্ডির ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অমরেন্দ্রনাথ রায় জানান, বাঘমুন্ডি থানার কুশলডি গ্রাম থেকেই ১৩৫ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পাশের গ্রাম গোবিন্দডিতেও ১৫ জন ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর রয়েছে l
তিনি বলেন, “গ্রামবাসীদের আপাতত কুয়োর জল ও চাপা কলের জল পান করতে বারণ করা হয়েছে l ট্যাঙ্কারে করে পানীয় জল কুশলডি গ্রাম সহ আশপাশের এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে l এছাড়াও স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে গ্রামে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওআরএস এবং ওষুধ দেওয়া হচ্ছে l সতর্ক করা হয়েছে আশাকর্মীদেরও।”
গোটা এলাকায় ডায়েরিয়ার প্রকোপ ছড়ানোয় এখন স্বাস্থ্য দফতর সচেতন হলেও বাসিন্দারা তাতে বিশেষ স্বস্তি পাচ্ছেন না। কারণ প্রত্যন্ত এই এলাকায় কখনই পানীয় জলের সুবন্দোবস্ত নেই। তাই আপাতত কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তা যে স্থায়ী কিছু নয়, এটা ভেবেই তাঁদের যাবতীয় উদ্বেগ।
Be the first to comment