রাজধানী দিল্লির ইন্ডিয়া গেটের সামনে গত পাঁচ দশক ধরে জ্বলছিল অমর জওয়ান জ্যোতির অনির্বাণ শিখা। অবশেষে শুক্রবার সেই শিখাকে মিশিয়ে দেওয়া হল নিকটস্থ ‘ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল’ বা ‘জাতীয় যুদ্ধ স্মারক’-এর প্রজ্বলিত অগ্নিশিখার সঙ্গে।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে জয়ী হয় ভারত। ভারতীয় জওয়ানদের রক্ত ও মুক্তিযোদ্ধাদের বলিদানের ভিতের উপর তৈরি হয় বাংলাদেশ। সেই যুদ্ধে শহিদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই স্মারক তৈরি হয়। ১৯৭২ সালে সাধারণতন্ত্র দিবসে এই সৌধের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।
সেই স্মারক তৈরির পর থেকে প্রতিবার সাধারণতন্ত্র দিবসের সকালে অমর জওয়ান জ্যোতিতে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যেত দেশের রাষ্ট্রপতি, দেশের প্রধানমন্ত্রী, নৌসেনা, বায়ুসেনা ও স্থলসেনার প্রধানকে। কিন্তু ৫০ বছর পর আজ সেই অনির্বাণ শিখা ‘জাতীয় যুদ্ধ স্মারক’-এ মিশে গেল।
২০১৯ সালে ইন্ডিয়া গেটের কাছেই ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে গ্রানাইট পাথরের গায়ে সোনালি অক্ষরে খোদাই করা রয়েছে ২৫ হাজার ৯৪২ জন শহিদের নাম। সেখানে ১৯৪৭-৪৮ সাল থেকে শুরু করে গালওয়ানে চিনের সঙ্গে সংঘর্ষে শহিদ জওয়ানদের নামও রয়েছে। জঙ্গি দমন অভিযানে শহিদ হওয়া জওয়ানদের নামও রয়েছে সৌধটিতে। ২০২০-র পর থেকেই সাধারণতন্ত্র দিবসের দিন বদল আসে রীতিতে। বর্তমানে সাধারণতন্ত্র দিবসের সকালে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
অমর জওয়ান জ্যোতির মতো ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালেও অনির্বাণ শিখা জ্বালানো হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে এক অনুষ্ঠানে সেই আগুনেই মিশে গেল অমর জওয়ান জ্যোতির আগুন।
কিন্তু কেন হঠাৎ এই সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র? সূত্রের খবর, দু’টি সৌধ রক্ষণাবেক্ষণে ক্রমে জটিলতা দেখা দিচ্ছিল। তাই খরচ ও লোকবল সংরক্ষণের জন্যই এহেন পদক্ষেপ করা হয়েছে। যদিও সমালোচনায় মুখর বিরোধীরা। এপ্রসঙ্গে কেন্দ্র আগেই জানিয়েছিল, অমর জওয়ান জ্যোতির অগ্নিশিখাকে নেভানো হচ্ছে বলে অযথা অপপ্রচার চালাচ্ছে বিরোধীরা।
Be the first to comment