৫০ বছর পর ‘নিভছে’ ইন্ডিয়া গেটের অমর জওয়ান জ্যোতির অনির্বাণ অগ্নিশিখা ৷ শুক্রবারই তা মিশে যাচ্ছে ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের অগ্নিশিখার সঙ্গে ৷ ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ১৯৭১-এর যুদ্ধে শহিদ জওয়ানদের স্মৃতিতে তৈরি করা হয়েছিল অমর জওয়ান জ্যোতি ৷ এই সিদ্ধান্তের জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী ৷
শুক্রবার বেলা ৩.৩০টে থেকে শুরু হবে অনুষ্ঠান ৷ ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফ চিফ এয়ার মার্শাল বলভদ্র রাধা কৃষ্ণ সেই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেবেন ৷ সূত্রের মারফৎ জানা গিয়েছে, অমর জওয়ান জ্যোতি ও ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের দুটি অগ্নিশিখা একইসঙ্গে প্রজ্জ্বলিত রাখা কঠিন হয়ে পড়ায় কেন্দ্রের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশের শহিদদের স্মৃতিতে যখন ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল তৈরি হয়েছে, তখন কেন আলাদা করে আর একটা অগ্নিশিখা প্রজ্জ্বলিত রাখা হবে, তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন ৷ ইন্ডিয়া গেটে যে শহিদদের নাম খোদাই করা রয়েছে, সেই নামগুলি ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালেও রয়েছে বলে জানিয়েছে সেনা সূত্র ৷
১৯১৪-১৯২১ সালের মধ্যে যে ব্রিটিশ-ভারতীয় সেনা শহিদ হয়েছিলেন, তাঁদের স্মরণে ইন্ডিয়া গেট মেমোরিয়াল তৈরি করেছিল তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ৷ ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে শহিদ জওয়ানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১৯৭২ সালে ইন্ডিয়া গেটের নিচে অনির্বাণ অগ্নিশিখা অমর জওয়ান জ্যোতির প্রতিষ্ঠা করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি ৷
সেই অমর জওয়ান জ্যোতি নিভিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন রাহুল গান্ধি ৷ টুইটে তিনি লিখেছেন, “আমাদের বীর জওয়ানদের জন্য যে অমর জওয়ান জ্যোতি জ্বলত, তা আজ নিভিয়ে দেওয়া হবে ৷ খুবই দুঃখের ব্যাপার ৷ কিছু মানুষ দেশপ্রেম ও বলিদান বুঝতে পারে না ৷ কোনও ব্যাপার নয়…আমরা আমাদের সৈনিকদের জন্য অমর জওয়ান জ্যোতি আবার জ্বালাব ৷”
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ১৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪০ একর জায়গার উপর তৈরি হওয়া ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়ালের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৷ এরপর থেকেই সেনাবাহিনীর যাবতীয় প্রথামাফিক অনুষ্ঠান ইন্ডিয়া গেট থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে ৷ ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধ, ১৯৪৭, ১৯৬৫, ১৯৭১ সালের ভারত-পাক যুদ্ধ, শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় শান্তিরক্ষী বাহিনীর অভিযান, ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধে শহিদ জওয়ানদের প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে এই মেমোরিয়াল ৷
Be the first to comment