রাতভর চলা গুলি বোমার লড়াই এবং তিনজনের মৃত্যুর জেরে ক্লোজ করা হল আমডাঙা থানার ওসি মানস দাসকে ৷ তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তুষারকান্তি বিশ্বাসকে। এখনও থমথমে আমডাঙার বহিশগাছা, কুশডাঙা, মরিচা, বোদাই ও তারাবেড়িয়ার পরিস্থিতি। বিকেলে মৃত তিনজনের দেহ ফিরিয়ে আনা হয় গ্রামে। তাই নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টির আশঙ্কায়, বাড়তি সতর্ক পুলিশ। স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে তারাবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন।
বুধবার সকাল হতেই গ্রামে ঢোকে বিশাল পুলিশ বাহিনী। শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। বিভিন্ন বাড়িতে হানা দিয়ে শয়ে শয়ে বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া এই সব বোমা নষ্ট করতে গ্রামে পৌঁছায় বম্ব ডিসপোসাল স্কোয়াড।
এক রাতেই যেন বদলে গিয়েছে গ্রামগুলির ছবি। প্রিয়জনের জন্য শোকতো রয়েইছে, পাশাপাশি ধ্বংসের চেহারা সর্বত্র। মাটির বাড়ির দেওয়ালে বোমের দাগ। রাস্তায় ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য সুতলি। রাতে আগুন দেওয়া হয়েছে, এমন অনেক পুড়ে যাওয়া বাড়ি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায় বেলা পর্যন্ত। রাস্তার পাশে শতাধিক ভাঙা দোকান। বেশিরভাগ গ্রামই পুরুষ শূন্য। বন্ধ দোকানপাট বাজার। চলছে র্যাফ কমব্যাট ফোর্সের টহল।
আজ বুধবার ছিল বোর্ড গঠন। তার আগে মঙ্গলবার সন্ধে থেকে শুরু হয় নির্বিচার গোলাগুলি। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে দীর্ঘক্ষণ আমডাঙা সহ প্রায় চারটি থানার পুলিশ একজোট হয়েও ঢুকতে পারেনি এলাকায়। ততক্ষণে বোমা গুলিতে মৃত্যু হয়েছে স্থানীয় সিপিআইএম নেতা মোজাফ্ফর পিঁয়াদা (৩৮), এবং দুই তৃণমূল কর্মী কুদ্দুস আলী গনি (৪৫) ও নাসির হালদারের। পরিস্থিতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে এই আশঙ্কায় আমডাঙার তারাবেড়িয়া, মরিচা এবং বোদাই গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেয় প্রশাসন।
রাতের দিকে আরও পুলিশ গিয়ে দেহগুলি বার করে আনতে সমর্থ হয়। তৃণমূলের যে চারজনকে বারাসত হাসপাতালে আনা হয়েছে তাঁরা হলেন নাজিমুল গাজী , রবিউল , আনোয়ার হোসেন ও ফৈজল হক। আহতদের দেখতে ও এলাকার পরিস্থিতির খবর নিতে বারাসত হাসপাতালে যান খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও আমডাঙার বিধায়ক রফিকার রহমান।
সিপিএমের অভিযোগ, তাড়াবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল কংগ্রেস পিছিয়ে রয়েছে। তাই তা দখলে আনতে সকাল থেকে তৃণমূল কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এলাকায় সন্ত্রাস তৈরি করে। অন্যদিকে তৃণমূল নেতৃত্ব ঘটনার দায় চাপিয়েছে সিপিএম ও বিজেপির উপর। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশের টহলদারি চললেও আগের রাতের অভিজ্ঞতা থেকে ভয়ে আবহ গোটা এলাকায়।
Be the first to comment