বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে একেবারে জনমুখী বাজেট ঘোষণা মমতা সরকারের। বাজেটে একগুচ্ছ জনমুখী প্রকল্পের প্রস্তাব। একই সঙ্গে আদিবাসী ভোট ব্যাংক ধরতে দুটি পৃথক বার্ধক্য ভাতার প্রকল্প ঘোষণা করলেন অমিত মিত্র। তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং আদিবাসীদের জন্যে এই ভাতার প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে রাজ্যের আর্থি বাজেটে। অমিত মিত্রের কথায় এই দুটি দুটি প্রকল্পের আওতায় তফসিলি জাতি এবং উপজাতির মানুষেরা মাসে ১ হাজার টাকা করে বার্ধক্যভাতা পাবেন। তবে অবশ্যই বয়স ৬০ বছরের উর্ধে হওয়া প্রয়োজন বলে বাজেটে জানানো হয়েছে।
রাজ্যের তফসিলি জাতির বয়স্ক মানুষের কথা মাথায় রেখে সরকার ‘বন্ধু’ নামে একটি প্রকল্পের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। নয়া এই প্রকল্পে যারা কোনও ধরনের ভাতা পান না, তাঁরা প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে বার্ধক্য ভাতা দেওয়া হবে। সরকারের নয়া এই প্রকল্পে রাজ্যের প্রায় ২১ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যে এই প্রকল্পে ব্যয় বাবদ বরাদ্দ করা হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। একই রকমের একটি প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে আদিবাসী মানুষদের জন্য। এই প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘জয় জহর’ প্রকল্প। যাঁর অধীনে আদিবাসী সমাজের ৬০ বছরের বেশি বয়সের মানুষ, যাঁরা অন্য কোনও সরকারি ভাতা পান না তাঁরা প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে বার্ধক্যভাতা পাবেন। এই প্রকল্পে উপকৃত হবেন ৫ লক্ষ মানুষ। এবং এর জন্য আগামী অর্থবর্ষে বরাদ্দ করা হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা।
এছাড়াও পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, আদিবাসী এবং তফসিলি ভাই-বোনের জন্যে বিশেষ বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে চলেছে রাজ্য সরকার। সেখানে তাঁদের ভাষাতেই পড়ানো হবে। এছাড়াও কেন্দুপাতার জন্যে বিশেষ প্রকল্পের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও আদিবাসীদের জমি কেউ নিতে পারবে না বলে ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার একটা আইন নিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
গত লোকসভা নির্বাচনে আধিবাসী ভোট ব্যাংকের একটা বড় অংশ চলে গিয়েছে বিজেপির কাছে। পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়াতে ব্যাপকভাবে বেড়েছে বিজেপির ভোট। আদিবাসী অধ্যূষিত এলাকাগুলিতে তুলনায় বেশ খারাপ ফল হয় তৃণমূলের। এই পরিস্থিতিতে সামনেই রাজ্যে বিধানসভা ভোট। জোড় লড়াই বিজেপি এবং বর্তমান শাসকদল তৃণমূলের সঙ্গে। এই অবস্থায় আদিবাসীদের মন ধরতে একেবারে তাঁদের জন্যে বাজেটে একের পর এক প্রকল্পের ঘোষণা তৃণমূল সরকারের।
Be the first to comment