পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের দামামা অমিত শাহ নিজে এসেই বাজিয়ে দিয়ে গিয়েছেন। তাই আর সময় নষ্ট না-করে বঙ্গ-বিজেপির রাশ কার্যত নিজেদের হাতে তুলে নিল দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সোমবার রাতেই কলকাতায় চলে এসেছিলেন বিএল সন্তোষ, অমিত মালব্য, সুনীল দেওধর, কৈলাস বিজয়বর্গীয়র মতো কেন্দ্রীয় নেতারা। মঙ্গলবার দলীয়স্তরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির পাঁচটা সাংগঠনিক জোনের দায়িত্ব দেওয়া হল পাঁচজন কেন্দ্রীয় নেতাকে। ওই পাঁচ নেতা ১৮ নভেম্বর থেকে দফায় দফায় বৈঠক করবেন বাংলায়। সেই রিপোর্ট যাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে। সেই রিপোর্ট পাওয়ার পরই আবার ৩০ নভেম্বর রাজ্যে আসতে পারেন অমিত।
ইতিমধ্যেই পার্টির কেন্দ্রীয় সম্পাদক সুনীল দেওধরকে মেদিনীপুর জোনের ভার দিয়ে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সাফল্যের পিছনে সুনীলের অবদানই সব থেকে বেশি বলে অভিমত রাজনৈতিক শিবিরের। এছাড়াও রাঢ়বঙ্গ জোনের দায়িত্বে বিনোদ সোনকর, কলকাতা জোনের দায়িত্বে দুষ্মন্ত গৌতম, নবদ্বীপ জোনের দায়িত্বে বিনোদ তাওরে ও উত্তরবঙ্গ জোনের দায়িত্বে কেন্দ্রীয় নেতা হরিশ দ্বিবেদীকে দেওয়া হল। মঙ্গলবার হেস্টিংসের দলীয় কার্যালয়ে রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিজেপির এই কেন্দ্রীয় নেতারা। সেখানে রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক পরিস্থিতির চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়। কোন কেন্দ্রীয় নেতা কোন জোনের ভার পাবেন, তা-ও চূড়ান্ত করে ফেলা হয় এদিনের বৈঠকে।
সম্প্রতি অমিত শাহ বঙ্গ-সফরে এসে সব থেকে বেশি জোর দিয়েছিলেন সাংগঠনিক শক্তিবৃদ্ধির উপর। দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়দের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে তাঁর স্পষ্ট বার্তা ছিল, বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে দ্রুত সংগঠনকে মজবুত করে ফেলতে হবে। তা যে নিছক কথার কথা ছিল না, তা স্পষ্ট কেন্দ্রীয় নেতাদের বাংলায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত থেকেই। সম্প্রতি ‘টেক স্যাভি’ অমিত মালব্যকে এ রাজের সহকারী পর্যবেক্ষক করে পাঠিয়ে বড়সড় চমক দিয়েছিলেন শাহ। এ বার সুনীল দেওধরদের মতো সাংগঠনিক নেতাদের বাংলায় পাঠিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, বাংলা দখলে তাঁরা কতটা মরিয়া।
তবে বিজেপির এই রণকৌশল নিয়ে পালটা কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর কথায়, ‘কে অমিত মালব্য, কে সুনীল দেওধররা আসছেন বাংলায় বিজেপির রণকৌশল ঠিক করতে। তার মানে স্পষ্ট এ রাজ্যের নেতারা একেবারেই অপদার্থ।’
Be the first to comment