রেলের নিয়মমতো এটা কোনও ট্রেন দুর্ঘটনাই নয়। তাই অমৃতসরের দুর্ঘটনায় মৃতদের কোনও ক্ষতিপূরণ দেবে না রেল। ইতিমধ্যেই রেল প্রতিমন্ত্রী মনোজ সিনহা বলেছেন, এই দুর্ঘটনার কোনও তদন্তের দরকার নেই। কারণ ট্রেনের কোথায় কত গতি হবে তা চালকদের বলা থেকে। দুর্ঘটনার জায়গায় একটা বাঁক ছিল। তা হয়তো চালক দেখতে পাননি। রেলবোর্ডের চেয়ারম্যান অশ্বিনী লোহানি বলেছেন, রামলীলার আয়োজকরা রেলকে আগাম কোনও খবর দেননি। দুর্ঘটনাও কোনও লেভেল ক্রসিংয়ে হয়নি, হয়েছে অমৃতসর এবং মানাওয়ালা স্টেশনের মাঝখানে। মাঝখানে লাইনের ওপর লোকের আসার কথাই নয়।
অমৃতসরের ধোবি ঘাটের কাছে জোড়া ফটকে মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬১। আহত আরও ৬০ জন। ওই ডিএমইউ ট্রেনটির ড্রাইভারকে লুধিয়ানায় গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ড্রাইভার জানিয়েছেন, সিগনাল সবুজ ছিল। সামেন যে অত লোক আছে তা তিনি টেরই পাননি। শুক্রবার রামলীলা দেখতে ট্রেন লাইনে জড়ো হওয়া ভিড়ের ওপর দিয়ে জলন্ধর থেকে অমৃতসরের ট্রেনটি চলে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা। রামলীলার আয়োজন করা হয়েছিল রেললাইনের পাশের একটি মাঠে। সেখান হাজার দুয়েক লোক ধরার জায়গা থাকলেও কম করেও ৭ হাজার লোক ভিড় জমান। রামলীলা দেখতে প্রচুর লোক লাইন দাঁড়িয়ে পড়েন। তাদের কেউ কেউ সেলফি ও ভিডিও তুলতে ব্যস্ত ছিলেন। সঙ্গে ছিল রামলীলার পটকার কানফাটানো শব্দ। ফলে কেউই বুঝতে পারেননি ট্রেন আসছে। ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে প্রবল গতিতে ট্রেনটি মানুষকে পিষে চলে যায়।
রেল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ট্রেনের গতি আগে থেকেই ঠিক করা থাকে। অল্পসময়ে ব্রেক কষা অসম্ভব। সূর্যাস্তের পর এই ঘটনা ঘটেছে, সন্ধে ৬টা ৫০ মিনিট নাগাদ। প্রচণ্ড ধোঁয়ায় ট্রেনচালক সামনে কিছু দেখতে পাননি। এদিকে, দুর্ঘটনার পর শুরু হয়ে গিয়েছে দোষারোপের পালা। সংগঠকরা বলছেন, কোনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি। ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকর কোনও বন্দোবস্ত করা হয়নি। অনেকেই জানাচ্ছেন, রামলীলার আয়োজক ছিল কংগ্রেস। পাঞ্জাবের মন্ত্রী নভজ্যোত সিং সিঁধুর স্ত্রী নভজ্যোত কাউর সিঁধু ছিলেন সেই অনুষ্ঠানের মুখ্য অতিথি। তিনি অবশ্য দোষ চাপিয়েছেন রেলের ওপর। রামলীলার আয়োজকরা পলাতক।
Be the first to comment