১৯৫৯ সালের ২২ জুলাই বেঙ্গালুরুতে জন্মগ্রহণ করেন অনন্ত কুমার। কেএস আর্টস কলেজ থেকে কলা বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে কর্নাটক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এল এল বি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৭ সালে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দেওয়ার আগে ১৯৮৫ সালে তিনি আরএসএস-র ছাত্র সংগঠন এবিভিপি’র রাজ্য সম্পাদকসহ অন্য পদে নির্বাচিত হন। পরে সর্বভারতীয় সম্পাদকও হন। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর ১৯৯৫ সালে অনন্ত কুমার কেন্দ্রীয় সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৯৬ সালে প্রথমবার মতো লোকসভায় সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন বেঙ্গালুরু দক্ষিণ আসন থেকে। রেল ও শিল্প মন্ত্রকের অধীনে বিভিন্ন কমিটির সদস্যও ছিলেন। ১৯৯৮ সালে এনডিএ সরকারের আমলে তাঁকে অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
অনন্ত কুমারের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ।
মোদি লেখেন, “আমার গুরুত্বপূর্ণ সহকর্মী ও বন্ধু অনন্ত কুমারজির প্রয়াণে গভীর শোকাহত। তিনি অসাধারণ নেতা ছিলেন। কম বয়সেই রাজনীতির আঙিনায় পা রেখেছিলেন। ভালো কাজের জন্য মানুষ তাঁকে সবসময় মনে রাখবে।” প্রধানমন্ত্রী আরও লেখেন, “অনন্ত কুমার বিভিন্ন মন্ত্রক দক্ষতার সঙ্গে সামলেছেন। তিনি BJP-র অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ছিলেন। কর্নাটকে বিশেষ করে বেঙ্গালুরু ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় দলকে শক্তিশালী করতে তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। তাঁকে তাঁর নির্বাচনী এলাকায় সবসময় পাওয়া যেত।”
প্রধানমন্ত্রী লেখেন, “অনন্ত কুমারজি-র স্ত্রী তেজস্বিনীজি-র সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁকে সমবেদনা জানিয়েছি। তাঁর পুরো পরিবার, বন্ধু ও সমর্থকদের পাশে আমরা রয়েছি। ওম শান্তি।”
অনন্ত কুমারের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দও। টুইটে তিনি লেখেন, “কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বরিষ্ঠ সাংসদ অনন্ত কুমারের প্রয়াণে শোকাহত। তাঁর মৃত্যু আমাদের দেশের জনগণ বিশেষত কর্নাটকের জনসাধারণের জন্য বড় ক্ষতি। তাঁর পরিবার, সহকর্মী ও অসংখ্য সহযোগীদের প্রতি সমবেদনা।”
শোকপ্রকাশ করেন উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু। টুইটে তিনি লেখেন, “তাঁর প্রয়াণে আমি গভীরভাবে শোকাহত। কয়েকমাস ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু ভাবিনি এইরকম কিছু ঘটবে। আমরা ভেবেছিলাম তিনি সুস্থ হয়ে আবার জনসেবার কাজে যোগ দেবেন। তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের প্রতি সমবেদনা রইল।”
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও শোকপ্রকাশ করেন।
শোকপ্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সদানন্দ গৌড়া ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।
টুইটে সীতারমন লেখেন, “অনন্ত কুমারের প্রয়াণে শোকাহত। BJP সবসময় তাঁর মস্তিষ্ক ও হৃদয়ে ছিল। ঈশ্বর যেন তাঁর পরিবারকে এই ক্ষতি বহন করার শক্তি দেন।”
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিং লেখেন, “আমার বরিষ্ঠ সহকর্মী ও বন্ধু অনন্ত কুমারজির প্রয়াণে আমি অত্যন্ত মর্মাহত ও দুঃখিত। তিনি সংসদের অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ সদস্য ছিলেন। যিনি বিভিন্নভাবে দেশকে সেবা করেছেন। মানুষের কল্যাণে তাঁর আবেগ ও নিষ্ঠা প্রশংসনীয় ছিল। তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।”
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামীও অনন্ত কুমারের মৃত্যুকে শোকপ্রকাশ করেছেন। তিনি লেখেন, “আমি আমার বন্ধুকে হারালাম। তিনি মূল্যবোধের রাজনীতি করতেন। সাংসদ ও মন্ত্রী হিসেবে তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করেছি। ঈশ্বর যেন তাঁর পরিবারকে এই ক্ষতি বহন করার শক্তি দেন।” BJP-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বলেন, “অনন্তজি দারুণ প্রশাসক ছিলেন। তিনি দক্ষতার সঙ্গে নানা মন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর মৃত্যু BJP ও ভারতীয় রাজনীতিতে শূন্যস্থান তৈরি করবে। যা দ্রুত ভরাট হবে না। ঈশ্বর যেন তাঁর পরিবার ও সমর্থকদের এই ক্ষতি বহন করার শক্তি দেন।”
শোকপ্রকাশ করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। টুইট বার্তায় তিনি লেখেন “অনন্ত কুমার জি একজন কর্মঠ রাজনীতিবিদ এবং বিশিষ্ট সমাজসেবক ছিলেন। কর্ণাটকের রাজনীতিতে তাঁর বড় অবদান রয়েছে। ভালো কাজের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তাঁর চলে যাওয়া খুব দুঃখের।”
শোকপ্রকাশ করেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, “খুব দুঃখজনক। তাঁর মৃত্যু সরকার এবং দলের জন্য বড় ক্ষতি। অনন্ত কুমার জি একজন দক্ষ প্রশাসক এবং জনপ্রিয় নেতা হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। উত্তরপ্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই।”
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অনন্ত কুমারের শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আজ দেশজুড়ে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। অন্যদিকে, তাঁর মৃত্যুতে কর্ণাটকে তিনদিন শোকপালনের কথা ঘোষণা করেছে কর্ণাটক সরকার। আজ রাজ্যে সরকারি দপ্তর বন্ধ থাকবে।
Be the first to comment