আনিস খান মৃত্যু মামলায় আপাতত সিটেই ভরসা রাখছে আদালত। একইসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, দ্বিতীয়বার ময়না তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। ময়না তদন্তের পর ভিসেরার নমুনা সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবারই এই নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। আনিসের পরিবারের তরফে বারবারই সিবিআই তদন্তের দাবি করা হচ্ছিল। তবে এদিন কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, তারা আপাতত সিটেই ভরসা রাখছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, সঠিক পথে তদন্ত এগোচ্ছে কি না তা এই মুহূর্তে বলা যায় না। একই সঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ, রাজ্যের তাবড় তিন আধিকারিক এই ঘটনার তদন্ত করছেন। সবেমাত্র তদন্ত শুরু হয়েছে। তাঁদের হাত থেকে তদন্তভার নিয়ে যদি অন্য কোনও তদন্তকারী সংস্থার হাতে তা দেওয়া হয় তা হলে সিট তদন্ত করছিল কি না সেটাই তো স্পষ্ট হবে না! কারণ ‘প্রিম্যাচিওর’ পর্বে রয়েছে এই সিট-তদন্ত। তাই এখনও অন্য কোনও হাতে তদন্তভার দিচ্ছে না তারা।
একইসঙ্গে এদিন আদালত জানিয়েছে, দ্বিতীয়বার দেহ ময়নাতদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। ময়না তদন্তের পর ভিসেরার নমুনা সংরক্ষণ করতে হবে। আর তা হবে কোনও জেলা জজের উপস্থিতিতে। একইসঙ্গে আনিসের যে মোবাইল ফোনটি তাও জেলা জজের তত্ত্বাবধানে সিএফএসএলকে পাঠাতে হবে। জেলা জজ সেটিকে সিল করে পাঠাবেন।
পাশাপাশি যাবতীয় ডিজিটাল তথ্য, হাতের ছাপ, মোবাইল ফোনে থাকা সমস্ত কিছু সংরক্ষিত করার কথাও বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দ্রুত দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য ও মামলাকারীকে। অন্যদিকে তদন্ত প্রক্রিয়া কতদূর এগোল তা দু’ সপ্তাহের মধ্যে জানাতে হবে সিটকে। অর্থাৎ আদালতে ‘প্রগ্রেস রিপোর্ট’ দেবে সিট। বৃহস্পতিবার এমনই জানানো হয়েছে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে।
অন্যদিকে এদিনই ধৃত হোমগার্ড ও সিভিক ভলান্টিয়ারকে আদালতে তোলার আগে বিস্ফোরক দাবি করেন তাঁরা। নিজেদের ‘বলির পাঁঠা’ বলে দাবি করেন দু’জনই। ধৃতদের দাবি, “আমরা সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমাদের বলির পাঁঠা করে আনিস মৃত্যুকাণ্ডের আগুনে জল ঢালা হচ্ছে। আমাদের থানা থেকে পাঠানো হয়েছিল। ওসির অর্ডারে গিয়েছিলাম।”
আগেই অবশ্য এই দাবি করেছিলেন হোম গার্ড কাশীনাথ বেরার স্ত্রী। তাঁর দাবি ছিল, “ওরা যেহেতু নীচু পোস্টের পুলিশ, তাই বড়রা নির্দেশ না দিলে ওরা নিশ্চয়ই যাবে না। ওরা জানেও না, কে আসামি, কাকে ধরতে যেতে হবে, কার নামে চার্জশিট আছে। তাহলে যদি ওরা গিয়ে থাকে, তবে উচু পোস্টের কেউ বললেই তো ওরা যাবে।”
আনিসের বাবা সালেম খান এখনও সিবিআই তদন্তের দাবি অনড়। তাঁর বক্তব্য, “আগের দিন সাসপেন্ড করা হল। এরপর গ্রেফতার করা হল। এখন যাঁরা গ্রেফতার হয়েছে তারা বলছে বলির পাঁঠা করা হয়েছে। বলির পাঁঠা ওসি তৈরি করেছে। তা হলে ওসিকে ধরার জন্য, এর উপরে কে আছে তা জানার জন্য সিবিআই তদন্ত দরকার। আমি সেটাই চাই।”
Be the first to comment