মা অন্নপূর্ণা এক হিন্দু দেবী। তাঁর অপর নাম অন্নদা। তিনি শক্তির এক রূপ। অন্নপূর্ণা দ্বিভূজা, তাঁর দুই হাতে অন্নপাত্র ও দর্বী; তিনি রক্তবর্ণা, সফরাক্ষী, স্তনভারনম্রা, বিচিত্র বসনা, নিরত অন্নপ্রয়াদিনী ও ভবদুঃখহন্ত্রী; তাঁর মস্তকে নবচন্দ্র, একপাশে ভূমি ও অন্যপাশে শ্রী। নৃত্যপরায়ণ শিবকে দেখে তিনি সন্তুষ্ট হন।
দেবী পার্বতী ভিক্ষারত শিবকে অন্নপ্রদান করে এই নাম প্রাপ্ত হন। চৈত্র মাসের শুক্লাষ্টমী তিথিতে অন্নপূর্ণার পূজা করা হয়। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, অন্নপূর্ণার পূজা করলে গৃহে অন্নাভাব থাকে না। কৃষ্ণানন্দ রচিত তন্ত্রসার গ্রন্থে এই পূজার বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া যায়। কাশীতে অন্নপূর্ণার একটি বিখ্যাত মন্দির আছে; এই মন্দিরে অন্নপূর্ণা পূজা ও অন্নকূট উৎসব প্রসিদ্ধ। পশ্চিমবঙ্গে অন্নপূর্ণা পূজার বিশেষ প্রচলন রয়েছে।
বিবাহের পর কৈলাশ শিখরে শিব ও পার্বতী বেশ সুখেই দাম্পত্যজীবন কাটাচ্ছিলেন। শিব ছিলেন দরিদ্র। আর্থিক অনটনের জেরে বেশ কিছুদিন পরই শুরু হয় দাম্পত্যকলহ। দারিদ্র্যের কারণে পার্বতীর তিরস্কারে ঘর ছেড়ে ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করেন শিব। কিন্তু কোথাও ভিক্ষে পেলেন না। শেষে ব্যর্থ হয়ে কৈলাশে ফেরেন। পার্বতীর মায়ায় তিনি যে ভিক্ষে পাচ্ছিলেন না, তা ঘুমাক্ষরেও টের পাননি শিব। পরে অবশ্য কৈলাশে ফিরে সঘৃত পালান্ন, পায়েস, পিঠে প্রভৃতি খান। এরপর দেবীর মহিমাবৃদ্ধির জন্য কাশী নির্মাণ করে সেখানে অন্নপূর্ণার মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন উনি। চৈত্রমাসের শুক্লা অষ্টমী তিথিতে সেই মন্দিরে দেবী অবতীর্ণ হলেন। সেই থেকেই দেবী অন্নপূর্ণার পূজার প্রচলন বাড়ে।
কাশীতে দেবী অন্নপূর্ণার বিখ্যাত মন্দির রয়েছে। সেখানে প্রতি বছর এই দিনটিতে দেবীর ধুমধাম করে পুজো হয়ে থাকে। এই মন্দিরে অন্নকূট উৎসব বিখ্যাত। এছাড়া হিন্দু ধর্মালম্বীদের কাছে এই পুজো অতি প্রসিদ্ধ।
ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
Be the first to comment