৩৯ বছর আগে পথ চলা শুরু হয়েছিল আনন্দলোক হাসপাতালের। সল্টলেক করুণাময়ী মোড়ে আনন্দলোক হাসপাতাল, নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের অত্যন্ত ভরসার জায়গা ছিল। হৃদরোগের চিকিৎসা, মূলত বিভিন্ন অস্ত্রোপচার, চোখের চিকিৎসার এক অন্যতম অগ্রণী প্রতিষ্ঠান ছিল এই আনন্দলোক। ধীরে ধীরে রাজ্যের মোট ১১ টি জায়গায় এর শাখা বিস্তার করে। আর সেই আনন্দলোক হাসপাতাল, করুণাময়ী শাখায় সোমবার সকালে লক আউট এর নোটিশ। মাথায় বাজ ভেঙে পড়ে কর্মীদের। হাসপাতালেও লক আউট এর নোটিশ পড়তে পারে, এ কেউ কল্পনাতেও আনতে পারেননি।
আনন্দলোক হাসপাতালের লুক আউট নোটিশে বলা আছে, স্থায়ী কর্মচারী ইউনিয়নের স্বেচ্ছাচারিতা, আর্থিক নয়-ছয়, রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এর জেরে হাসপাতাল চূড়ান্ত লোকসানে চলছে। আগে যেখানে প্রতিদিন ১৪ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা আয় হতো, এখন সেটা কমে তিন থেকে চার লক্ষ টাকায় দাঁড়িয়েছে। রোগীদের ভর্তি অনেকটাই কমে গেছে। চিকিৎসকদের তিনমাস এবং কর্মীদের দু’মাসের মাইনে বাকি। এই অবস্থায় আর হাসপাতাল চালানো সম্ভব হচ্ছে না। আগামী পয়লা জানুয়ারি থেকে হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হবে।
হাসপাতালের কর্ণধার দেব কুমার শরাফ পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে, আনন্দলোকের হিসাব রক্ষক রমেশ ঝাঁ, ম্যানেজার ভবেশ ঝাঁ, দিনের পর দিন ধরে আর্থিক নয়-ছয় করে হাসপাতালের অবস্থা সঙ্গীন করে তুলেছে।
এদিকে লক আউট নোটিশের প্রতিবাদে সোমবার সন্ধ্যায় আনন্দলোক হাসপাতালে সাড়ে তিনশর ওপর চিকিৎসক-নার্স, কর্মীরা এক বিক্ষোভ মিছিল করে। মোমবাতি জ্বালিয়ে তাঁরা নীরব প্রতিবাদ জানিয়ে বিধাননগর উত্তর থানায় স্মারকলিপিও জমা দেয়। যদিও গভীর রাতে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়। হাসপাতাল কর্ণধার ডিকে শরাফ জানান, হাসপাতাল বন্ধ হবে না। রোগীদের স্বার্থে যে কোন মূল্যে এই হাসপাতাল চালু রাখা হবে। কর্মী ইউনিয়নের দুই নেতাকে অন্যত্র বদলি করা হবে। মনে করা হচ্ছে, রাজ্য সরকারের একদম উপরমহল থেকে চাপ সৃষ্টি হওয়ার জন্যই এই নাটকীয় পরিবর্তন।
Be the first to comment