বীরভূম মানেই অনুব্রত মণ্ডলের গড়। বোমা, গুলি চলার নজির সেই জেলায় কম নেই। আর সেই কেষ্ট মণ্ডলের গড়েই গণহত্যার ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা রাজ্যকে। তার মধ্যে আবার ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শর্ট সার্কিট তত্ত্ব খাড়া করে ফেলেছেন বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত। বরাবরই বিতর্কের শীর্ষে থাকা এই তৃণমূল নেতাকে বৃহস্পতিবার দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই। মমতার সঙ্গে এক গাড়িতেই রামপুরহাট যান অনুব্রত। আর সেই অনুব্রত-র নাম শুনে শুক্রবারের সাংবাদিক বৈঠকে কার্যত বিরক্তি প্রকাশ করলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
বগটুইয়ের মামলা ঠিক কী ভাবে সাজানো হবে? কোন পথে মামলা সাজালে কড়া শাস্তি পাবেন দোষীরা? বগটুইয়ের মাটিতে দাঁড়িয়ে মমতাকে সেই পরামর্শ দিয়েছেন অনুব্রত। স্বজনহারাদের সামনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা যখন অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির আশ্বাস দিচ্ছেন, তখন পাশ থেকে অনুব্রতই পরামর্শ দিয়েছেন মামলাটা যাতে সূঁচপুর গণহত্যা মামলার মতো করে সাজানো হয়। কারণ ওই মামলায় এখনও জেলে রয়েছেন দোষীরা।
মুখ্যমন্ত্রীকে কেন জেলা সভাপতি পরামর্শ দিচ্ছেন? শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রশ্ন উঠতেই কুণাল ঘোষের গলায় শোনা গেল কটাক্ষের সুর! তিনি বলে উঠলেন, উনি বড় নেতা, বেশি বোঝেন। ওনার সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। একবার নয়, পরপর দুবার কুণালকে বলতে শোনা গেল, ‘বড় নেতা, বেশি বোঝেন।’
অনুব্রত কোনও প্রশাসনিক পদে না থাকলেও তিনি যে তৃণমূলের একজন বড় নেতা, সে কথা অনেকেই মানেন। তবে এ দিন কুণালের বক্তব্যে ‘বড় নেতা’ কথাটি সম্মানসূচক নাকি কটাক্ষের, সেই প্রশ্নই উঠছে। বিতর্ক যতই থাকুক বরাবরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যাের স্নেহধন্য বলে পরিচিত অনুব্রত।
আসলে বগটুইতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কেসটা খুব ভালোভাবে আটঘাট বেঁধে সাজাতে হবে। কারণ আমি শুনেছি আগের কেসটা, যেটা মার্ডার হয়েছিল তিন চার বছর আগে হাইকোর্ট থেকে বেল পেয়ে গিয়েছে।’ আর তখনই পাশ থেকে পরামর্শ দেন অনুব্রত। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, ‘সূঁচপুরে যেমন সাজিয়েছিল, এখনও জেলে রয়েছে। সেই কথার রেশ ধরেই মুখ্যমন্ত্রী ডিজিকে নির্দেশ দেন, সূঁচপুরের কেসটা দেখে নিন।’ আবার পাশ থেকে অনুব্রত বলেন, সূঁচপুরের মতো কেসটা সাজাতে হবে। অনুব্রতর সেই পরামর্শ নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক।
Be the first to comment