ভোটের সকালে হন্তদন্ত হয়ে অনুব্রতের বাড়িতে ডাক্তার-নার্স

Spread the love

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ হঠাৎই বোলপুর নিচুপট্টি এলাকায় অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে হন্তদন্ত হয়ে ঢুকতে দেখা গেল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের এক চিকিৎসককে। সঙ্গে নার্স, প্রেশার মাপার যন্ত্র, ইসিজি মেশিন। তবে কি ভোটের দিন কোনও সমস্যা দেখা দিল ‘কেষ্টদা’র?

প্রশ্ন শেষ করার আগেই চিকিৎসক জানালেন, সুপার পাঠিয়েছেন। তার কিছুক্ষণ পর ১২টা নাগাদ হলুদ পাঞ্জাবি, সাদা পায়জামায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন স্বকন্যা অনুব্রত মণ্ডল। দুই বাইকে সওয়ার হলেন ‘বাপ-বেটি’। প্রয়োগ করে এলেন নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার।

লক্ষ্মীবারেই এ রাজ্যে ভোটপর্ব শেষ। বৃহস্পতিবার অষ্টম দফার ভোট। ৩৫টি বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচনের পাশাপাশি ভোটগ্রহণ শীতলকুচির ১২৬ নম্বর বুথেও। বীরভূমের ১১টি কেন্দ্রেই এদিন ভোট চলছে। হেভিওয়েট কেন্দ্র নিঃসন্দেহে বোলপুর। ভোটে না দাঁড়ালেও এই বোলপুর অনুব্রত মণ্ডলের গড় বলে কথা!

প্রত্যেক বছর ভোরে স্নান সেরে পুজো করে জেলা অফিসে গিয়ে বসেন ‘দিদি’র স্নেহের ‘কেষ্ট’। টেবিলে ছড়ানো থাকে একগুচ্ছ মোবাইল ফোন। ফোনাফুনিতেই বীরভূমের ভোটটা করান তিনি। তবে এবার একেবারে অন্য মুডে দেখা গেল কমিশনের ‘নজরবন্দি’ অনুব্রতকে।

ঘুম থেকেই উঠেছেন ৮টা নাগাদ। এরপর স্নান সেরে পুজো করে বোলপুরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নিচুপট্টির বাড়িতেই ছিলেন। সাড়ে ১১টা নাগাদ সেখানে পৌঁছন বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের এক চিকিৎসক, নার্স। ইসিজি হওয়ার কথা তাঁর। সঙ্গে অন্যান্য ‘চেকআপ’। সে সব সেরে ১২টা নাগাদ একেবারে ধোপধুরস্ত হলুদ পাঞ্জাবি আর পায়জামায় বাইকে চেপে ভোটকেন্দ্রের দিকে রওনা দেন তিনি। ভোট দিতে যাওয়ার সময় বাবার সঙ্গেই বাড়ি থেকে বের হন অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যা। তিনিও অপর একটি বাইকে চেপে ভোট দিতে যান ভাগবত নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের বুথে।

তৃণমূলের জমানায় ভোটের বাংলায় বারবার শিরোনামে উঠে এসেছে অনুব্রত মণ্ডলের নাম। বাকি সব বিতর্ক একদিকে, অপরদিকে অনুব্রত। ভোট বাংলায় তাঁর ‘টোটকা’ ঝড় তোলে। এবারও তো তাঁর হাত ধরেই ‘খেলা’ হচ্ছে। বাম-ডান নির্বিশেষে সকলের মুখেই ‘খেলা হবে’ স্লোগান। মঙ্গলবার থেকে নির্বাচন কমিশন তাঁকে নজরবন্দি করেছে। অথচ ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগে বুধবার যে ভাবে তিনি কমিশনের চোখে ‘ধাঁধা’ লাগিয়ে ছাড়লেন, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মানছেন-নিঃসন্দেহে ‘কেষ্ট’ বড় ‘খেলোয়াড়’।

ভোটের দিন অবশ্য একটু চুপচাপই রয়েছেন তিনি। সংবাদমাধ্যমের সামনেও মুখ খোলেননি দুপুর পর্যন্ত। ভোট দিয়ে তারপর দলীয় কার্যালয়ে গিয়েছেন। নেই কোনও হুঙ্কার। কেউ কেউ বলছেন, দলের বারণ মানছেন তিনি। কেউ বলছেন, এবার ভোটে চাপে অনুব্রত। সত্যিই চাপ নাকি এটা বীরভূমের দুঁদে এই নেতার খেলোয়াড়ি কৌশল তা বুঝতে ২ মে অবধি অপেক্ষা করতেই হবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*