পাচামি এলাকায় আদিবাসীদের কর্মসংস্থানে উদ্যোগী রাজ্য, তড়িঘড়ি বৈঠকে অনুব্রত মণ্ডল

Spread the love

সমস্ত বিতর্ক এড়িয়ে গিয়েও পাচামি এলাকায় শিল্প আনতে তৎপর রাজ্য সরকার। এ বার পাচামি এলাকায় কর্মসংস্থান বাড়াতে উদ্য়োগী রাজ্যের স্বরোজগার নিগম লিমিটেড। মঙ্গলবার দফতর চেয়ারম্যান অনুব্রত মণ্ডল বৈঠক করলেন অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে।

সম্প্রতি রাজ্যের স্বরোজগার নিগম লিমিটেড এর চেয়ারম্যান পদে বসেছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এই পদে বসার পর  প্রথম বোর্ড মেম্বারদের সাথে বৈঠক করলেন তিনি। মঙ্গলবার বোলপুর সার্কিট হাউসে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

স্বরোজগার দফতরের বৈঠকে উঠে এল দেউচা পাচামি এলাকার আদিবাসীদের কর্মসংস্থানের বিষয়। এদিনের বৈঠকে, আদিবাসীদের স্বনির্ভর করতে কী কী বিষয় নিয়ে ট্রেনিং দেওয়া যেতে পারে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা ভরত কৌল ও অন্যান্য বোর্ড মেম্বাররা।

বৈঠক শেষে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, পাচামি এলাকার আদিবাসীদের কীভাবে দ্রুত স্বনির্ভর করা যায়, পাশাপাশি তাঁদের মোটর ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থাও করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এই শিল্পের জন্য সাধারণ মানুষের অনেক উন্নয়ন হবে।” বৈঠকে উপস্থিত অভিনেতা ভরত কৌল বলেন, আদিবাসীদের কী কী কাজ শেখানো যেতে পারে তাই নিয়েই এই বৈঠকে মূলত আলোচনা হয়েছে।

প্রসঙ্গত পাচামি এলাকায় বিরোধের ঝড় যেন থামছেই না। দেউচা পাচামি প্রকল্প সফল করতে একের পর পদক্ষেপ করছে সরকার। ‘ধীরে চলো’ নীতিই গ্রহণ করেছে রাজ্য। তবুও  মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন করে দেউচা পাচামি কোল ব্লক নিয়ে প্যাকেজ ঘোষণার পর থেকে স্থানীয়দের একাংশের বিরোধিতা দেখা গিয়েছে। আবার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও আন্দোলনকারীদের পক্ষ নিয়েছেন। আদিবাসী সম্প্রদায়ের একাংশ এবং বিরোধী দলের তরফ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, আদিবাসীদের উচ্ছেদ করে কোনওভাবেই এখানে শিল্প হতে দেওয়া যাবে না।

কিছুদিন আগেই ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি পাচামি এলাকা পরিদর্শন করেন। তারও আগে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তীরাও পাচামি এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হন। কিছুদিন আগেই সেখানে মহিলা ও পুলিশের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধের ঘটনায় কার্যত শাসক-বিরোধী তীব্র কোন্দল শুরু হয়।

পাচামি প্রকল্পকে কেন্দ্র করে বারবার আদিবাসীদের একাংশ আন্দোলন করছেন। তাঁদের দাবি, কোনও শিল্প চাননা। পূর্বপুরুষের ভিটেজমি বেচে দিয়ে কোথাও যাবেন না। এ নিয়ে একাধিক বার উত্তেজনা ছড়িয়েছে দেউচা পাচামিতে। যদিও অনুব্রত মণ্ডলদের দাবি, বিরোধীদের একাংশ রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে আদিবাসীদের খেপিয়ে তুলতে চাইছেন। এর মধ্যে সম্প্রতি প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ নিয়ে বেশ কয়েকবার বৈঠক করে ফেলেছেন প্রশাসনিক কর্তারা। যদিও আন্দোলনও চলছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, বীরভূমের দেউচা পাচামিতে সিঙ্গুরের ছায়া দেখা যাচ্ছে। তফাৎ শুধু তখনকার বিরোধী রাজনৈতিক দল এখন শাসকের আসনে আর শাসকরা বিরোধীর ভূমিকায়।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*