ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় গত সপ্তাহেই কলকাতা হাইকোর্ট রক্ষাকবচ দিয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে। এখনই সিবিআই তাঁর প্রতি কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না। কিন্তু সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই ফের সিবিআই-কাঁটা অনুব্রতের দুয়ারে। গরু পাচারকাণ্ডে এবার তলব করা হল অনুব্রতকে। বুধবারই তৃণমূল সাংসদ দেবকে এই মামলায় নোটিস পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার নোটিস গেল অনুব্রত মণ্ডলের কাছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় সিবিআই দফতর নিজাম প্যালেসে তলব করা হয়েছে তাঁকে। গরু পাচারকাণ্ডে অনুব্রতকে এটি সিবিআইয়ের দ্বিতীয় নোটিস।
এর আগে গত এপ্রিলে তলব করা হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু সেবার তিনি অসুস্থতার কথা বলে সেই হাজিরা এড়িয়ে যান। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় রক্ষাকবজ থাকলেও গরু পাচারকাণ্ডে রক্ষাকবজ নেই অনুব্রতর। ফলে এবার বীরভূমের ‘হেভিওয়েট’ এই তৃণমূল নেতা কী করেন সেদিকেই নজর সকলের।
কাকতালীয়ভাবে এর আগে গরু পাচারকাণ্ডে যখন অনুব্রত মণ্ডলকে সিবিআই নোটিস পাঠিয়েছিল, তখনও রাজ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভোট ছিল। এপ্রিলে বিধানসভা ভোট হয় বাংলায়। ২৯ এপ্রিল ছিল বীরভূমে ভোট। এদিকে ২৭ এপ্রিলের মধ্যে অনুব্রতকে সিবিআই হাজির হতে বলেছিল। যা নিয়ে সরব হয়েছিলেন স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার এই ‘অতি তৎপরতা’কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত বলেই দাবি করেছিলেন তিনি। তৃণমূলের বক্তব্য ছিল, শাসকদলের উপর চাপ সৃষ্টি করতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকেই হাতিয়ার করা হচ্ছে।
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে বাকি ১০৭টি পুরসভার সঙ্গেই ভোট হবে বীরভূমের পাঁচ পুরসভায়। যদিও ইতিমধ্যেই সাঁইথিয়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে ঘাসফুল। সিউড়ি, রামপুরহাট, দুবরাজপুর, বোলপুরের ভোট অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। অনুব্রত মণ্ডল আগেই জানিয়েছেন, ভোট নিয়ে আত্মবিশ্বাসী তিনি। অনেক বেশি ভোটে এবার তৃণমূল জিতবে বলেই জানিয়েছেন অনুব্রত।
এর আগে যখন ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিবিআই ডাকে, তখনই অনুব্রত মণ্ডল দাবি করেছিলেন, এই তলবের পিছনে রাজনীতি রয়েছে। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টে যান তিনি। অনুব্রতর বক্তব্য ছিল, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় তাঁকে সাক্ষী হিসাবে ডাকা হয়েছে। সমন আসার পর বারবার সিবিআইকে তিনি জানিয়েছেন, শরীরে তাঁর নানা সমস্যা রয়েছে। অনুব্রত থাকেন বোলপুরে, অথচ সিবিআই তাঁকে দুর্গাপুরে ডেকে পাঠাচ্ছে। যেহেতু এই ঘটনায় অনুব্রত মণ্ডল সাক্ষী, অভিযুক্ত নন, তাই তাঁর বিরুদ্ধে এখনই কোনও কড়া পদক্ষেপ নয় সিবিআইয়ের বলেই জানায় হাইকোর্ট।
অন্যদিকে অভিনেতা-সাংসদ দেবকে ১৫ ফেব্রুয়ারি গরু পাচার মামলায় ডাকা হয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, ২০১৭-১৮ সাল নাগাদ গরুকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত এনামুল হকের কাছ থেকে দেব নগদ কয়েক লক্ষ টাকা ও ঘড়ি-সহ বেশ কিছু উপহার নিয়েছিলেন। এনামুল নিজেই নাকি সিবিআইকে এ কথা জানান বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই সূত্র ধরেই হাজির হতে বলা হয়েছে দেবকে।
Be the first to comment