কিছুতেই অনুব্রতকে নিজাম প্যালেসে নিতে পারছে না সিবিআই! চতুর্থবারের তলবও এড়িয়ে গেলেন

Spread the love

গরু পাচার মামলায় চতুর্থ নোটিসের পরও হাজিরা এড়ালেন অনুব্রত মণ্ডল। সিবিআই মঙ্গলবার নিজাম প্যালেসে তলব করেছিল বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে। কিন্তু তিনি এদিন হাজিরা দেননি। বরং গরু পাচার মামলায় রক্ষাকবচ চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ থেকে খালি হাতে ফেরার পর ডিভিশন বেঞ্চে যান তিনি। এরপর ডিভিশন বেঞ্চেও যান তিনি। যেহেতু ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করা হয়েছে এবং বিষয়টি বিচারাধীন। তাই এদিন হাজিরা দিচ্ছেন না অনুব্রত। তাঁর আইনজীবী এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়ে এসেছেন নিজাম প্যালেসে গিয়ে।

মঙ্গলবার অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে যান। সিবিআই সূত্রে খবর, সেখানে অনুব্রতর তরফে তিনি একটি চিঠি জমা দেন গোয়েন্দাদের কাছে। সেখানে লেখা হয়েছে, যেহেতু তাঁদের তরফে আদালতে একটি রক্ষাকবচের আবেদন করা হয়েছে, বিষয়টি বিচারাধীন। বুধবার এই মামলার শুনানি। যেহেতু বিষয়টি বিচারাধীন তাই তিনি এখন হাজিরা দিচ্ছেন না। এখন সিবিআই কোন পথে পা বাড়ায় সেটাই দেখার। হতে পারে আরও একবার চিঠি দিয়ে তলব করা হতে পারে অনুব্রত মণ্ডলকে। আবার এমনও হতে পারে আদালতের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে অনুব্রত মামলার রক্ষাকবচ প্রার্থনার মামলাটি ওঠে। সেখানে বিচারপতি জানতে চান, এই মামলায় তদন্তকারীরা অনুব্রতকে তো অভিযুক্ত হিসাবে ডাকছেন না, তা হলে গ্রেফতারের আশঙ্কা কেন? একইসঙ্গে এই শুনানি চলাকালীন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ শোনান বিচারপতি। তদন্তকারী কোনও সংস্থা কাউকে যে কোনও কারণে ডাকলেই আদালতকে কেন বারবার ঢাল করার চেষ্টা করা হবে। এভাবে সিবিআইয়ের তদন্তপ্রক্রিয়া বিঘ্নিত করা ঠিক নয়। একইসঙ্গে আদালত অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবীকে পরামর্শ দেন, দরকারে আগাম জামিন চাওয়া যেতে পারে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি গরু পাচার মামলায় প্রথমবার ডেকে পাঠানো হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। সে সময় তাঁর আইনজীবী জানিয়ছিলেন, মামলার তদন্তে সহযোগিতা করতে রাজি তিনি। জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। কিন্তু কলকাতায় সিবিআই দফতরে গিয়ে হাজিরা দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়, শারীরিক অসুস্থতার জন্য। বোলপুরে বাড়ির কাছাকাছি কিংবা কাছাকাছি কোথাও ডাকা হোক তাঁকে। এরপর আরও তিনটি নোটিস পাঠানো হয় অনুব্রতকে।

ইতিমধ্যেই গরুপাচারকাণ্ডে অনুব্রতকে সিবিআইয়ের নোটিস প্রসঙ্গে তোপ দেগেছে বিজেপি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আগেই কটাক্ষ করেছেন, “এত দেরি করে নোটিস কেন? আমি তো আগে বলেইছিলাম, বীরভূমের এক নেতা বসে বসে কয়লা পাচার, গরু পাচার করে। এই নোটিস আরও আগে পাঠানো দরকার ছিল। শুধু তো সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে ডাকলেই হবে না। ভেতরে ঢোকাতে হবে।”

গত জানুয়ারি মাসেই অনুব্রত মণ্ডলকে আরও একবার ডেকেছিল সিবিআই। পুরভোটের আগে আগে ডাক পড়েছিল তাঁর। সে সময় ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় তলব করা হয়েছিল। সেই তলবও এড়িয়ে যান বীরভূমের এই নেতা। গ্রেফতারি আশঙ্কায় কলকাতা হাইকোর্টে যান। জানুয়ারি মাসের শুরুতেই আদালত অনুব্রত মণ্ডলকে রক্ষাকবচ দেয় আদালত। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় অনুব্রতকে গ্রেফতার বা তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ যাতে না করা হয়, সেই নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*