করোনার এত ভয় হলে মাস্ক ছাড়াই কীভাবে এত জায়গায় যান? অনুব্রতর রক্ষাকবচ মামলায় প্রশ্ন সিবিআই-এর

Spread the love

যদি করোনার এতই ভয় থাকে, তাহলে মাস্ক ছাড়া কীভাবে বিভিন্ন জায়গায় উপস্থিত থাকছেন? অন্তত অনুব্রত মণ্ডলের ফেসবুক পেজ তো সেকথা বলছে। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের রক্ষাকবচের মামলার শুনানিতে সওয়াল করেন সিবিআই-এর আইনজীবী।বুধবার হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। অনুব্রত পক্ষে এদিন আদালতে সওয়াল করেন বিশিষ্ট আইনজীবী কথা রাজ্যসভার সাংসদ বিবেক তাঙ্খা। তিনি আদালতে বলেন, শরীরের জন্য সময় চান অনুব্রত। ২০০ কিলোমিটার যেতে বলা হচ্ছে। তদন্তের নামে আসলে হেনস্থা করা হচ্ছে তাঁকে।

আইনজীবী বলেন, তদন্ত থেকে পালাচ্ছি না। সহযোগিতা করতে চাই। সিবিআই আজকাল সাক্ষীকে ডেকে গ্রেফতার করে। তাই সিবিআই-এর এই আচরণকে সাধারণ মানুষ ভয় পায়। সাক্ষীকে এভাবে ভয় দেখানো যায় না। কোনও অপরাধ নেই, তাই হুমকি নয়। রক্ষাকবচ দেওয়া হোক। আদালতে সওয়াল করেন অনুব্রতর আইনজীবী।

তবে সিবিআই-এর আইনজীবী এসভি রাজুর তরফে বলা হয়, ১৫ মার্চ নোটিশের মেয়াদ শেষ হয়েছে। মঙ্গলবারই সিবিআই দফতরে আসতে বলা হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলকে। ফলে এই আর্জির গ্রহণযোগ্যতা নেই।” তিনি বলেন, “তদন্তের এই পর্যায়ে আদালত বাধা দিতে পারে না। যিনি বলছেন করোনার জন্য ভয় পাচ্ছেন, তাঁর ফেসবুকেই মাস্ক ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় উপস্থিত থাকার ছবি রয়েছে। সেটা কীভাবে সম্ভব? সিবিআই-এর আইনজীবী বলেন, এসএসকেএম থেকে নিজাম প্যালেশ ৮০০ মিটার দূরত্ব। তাহলে আসতে সমস্যা কোথায়?” এরপরই সিবিআই-এর আইনজীবী প্রশ্ন করেন, অনুব্রত মণ্ডল একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টে লেখা, Hon’bl Mr. Anubrata Mandal, তিনি কি বিচারপতি না মন্ত্রী?

প্রসঙ্গত, গরু পাচার মামলায় ২৪ এপ্রিল প্রথম নোটিস দেয় সিবিআই। এনামুল হককে গরু পাচার কাণ্ডে সাক্ষী হিসেবে ডাকা হয়। সেসময় হাজিরা এড়িয়ে যান অনুব্রত। তাঁর আইনজীবী জানান, কিডনি ও শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভূগছেন অনুব্রত। অন্য আরেকটা মামলায় ২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রক্ষাকবচ ছিল অনুব্রতর। এরপর কোনও নোটিস আসেনি। ১৪ ফ্রেবরুয়ারি তে হঠাৎ করেই নিজাম প্যালেস গরু পাচার কাণ্ডে ফের ডেকে পাঠায় অনুব্রতকে। হাজিরা এড়ান অনুব্রত। তাঁর আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, পাচার মামলায় তদন্তে সহযোগিতা করতে রাজি তিনি। জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। কিন্তু কলকাতায় সিবিআই দফতরে গিয়ে হাজিরা দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়, শারীরিক অসুস্থতার জন্য। বোলপুরে বাড়ির কাছাকাছি কিংবা কাছাকাছি কোথাও ডাকা হোক তাঁকে। কিন্তু তারপরও ফের নোটিস। ১৪ মার্চ তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি হাজির হননি।

হাইকোর্টে রক্ষাকবচ চেয়ে দ্বারস্থ হন অনুব্রত। বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা অনুব্রতর রক্ষাকবচের আর্জি খারিজ করে দেন।  বিচারপতি বলেন, “তদন্তকারী সংস্থা কোনও কারণে সমন পাঠালেই আদালত বারবার ঢাল হতে পারেনা। সিবিআই-এর হাত এভাবে বাধা ঠিক নয়।” এরপর আবারও  চতুর্থবার নোটিস পাঠানো হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। ১৫ মার্চ তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল নিজাম প্যালেসে। যদিও এরই মধ্যে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন অনুব্রত।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*