অপরাজিতা বিল ২০২৪’-এর স্বপক্ষে বক্তব্য রাখতে উঠতে সিবিআইয়ের কাছে বিচার চাইলেন মমতা

Spread the love

 

চিরন্তন ব্যানার্জি:-

রাজ্য সরকার এদিন বিধানসভায় পেশ করেছে ‘অপরাজিতা বিল ২০২৪’। সেই বিলের স্বপক্ষে বক্তব্য রাখতে উঠে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরজি কর কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে আনেন। সেই সময়েই তিনি বলেন, ‘আমি কারও জ্ঞান শুনবো না। আমার লাইনে আসতে সময় লাগবে। আপনাদের লাইন বেলাইন হয়ে গেছে। ধর্ষনের জন্য নিকৃষ্ট অপরাধীকেও শাস্তি দেওয়ার কথা আমরা বলছি। আজ ৩ সেপ্টেম্বর ঐতিহাসিক দিন। ১৯৮১ সালে ওই দিনে মেয়েদের অধিকারী সুরক্ষিত করার জন্য রাষ্ট্র সংঘের নারী বৈষম্য বিরোধী কমিটি হয়। আর জি কর কাণ্ডে আমাদের পুলিশ তদন্ত করছিল। যতদিন তদন্ত কলকাতা পুলিশের হাতে ছিল, আমি কোনও দায়িত্ব পালন করিনি, বলতে পারবেন না। ১২ তারিখ নির্যাতিতার বাড়িতে যাই। যা যা তদন্তে উঠে এসেছিল, সেইসব তার মা বাবার কাছে পাঠান হয়। আমি ওদের সঙ্গে ফোনেও কথা বলেছি। রবিবার পর্যন্ত সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু আদালত তার আগেই সেই তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছে। আমরা এখন সেই সিবিআইয়ের কাছেই বিচার চাই।

এদিন অপরাজিতা বিলের ওপর আলোচনার জন্য ২ ঘন্টা সময় বরাদ্দ করেছিলেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়েই বক্তব্য রাখেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্য পেশের শুরুতেই শুভেন্দুর তোলা বেশ কিছু প্রশ্নের জবাব দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের এবং বিরোধী দলের সবাইকে শান্ত থাকতে অনুরোধ করছি। সত্যি-মিথ্যে কী বলব, আপনার থেকে জ্ঞান নেব না। বিরোধী দলনেতা বললেন, বিলটা আইন হিসেবে কার্যকর করতে হবে। রাজ্যপালকে বলুন বিলটা সই করে দিতে। তারপর যদি কার্যকর না হয়, সেটা আমরা দেখব। সারা দেশে যাঁরা ধর্ষিতা হয়েছেন, তাঁদের প্রতি শোকজ্ঞাপন করছি। সঙ্গে সঙ্গে সারা ভারতে সকল নির্যাতিতার পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছি। দিল্লির নির্ভয়া-কাণ্ডের পর আমি কবিতা লিখেছিলাম। আপানারা বলেছেন ট্রেনে ধর্ষণ হয়েছে। ট্রেনটা কি আমাদের? রাজ্য সরকারের? ট্রেনের ভিতরের সুরক্ষার দায়িত্ব আরপিএফের। সেটা তাদের ব্যর্থতা। দেশে ধর্ষণের মতো ঘটনায় শাস্তির সংখ্যা খুব কম। ৭৬ শতাংশ ক্ষেত্রে পুলিশ তদন্ত করে চার্জশিট পেশ করেছে। মাত্র ২.৫৬ শতাংশ ক্ষেত্রে অপরাধী দোষী সাব্যস্ত হয়েছে।’
মমতা এদিন তাঁর বক্তব্যে কামদুনির প্রসঙ্গও টেনে আনেন। কেননা শুভেন্দু তাঁর বক্তব্যে কামদুনি প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন। তাঁর উত্তরেই মমতা বলেন, ‘৭ জুন, ২০১৩ ঘটনাটি ঘটেছিল। তিন সপ্তাহের মধ্যে সিআইডি চার্জশিট দিয়েছিল। ১০ জুলাই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আদালত রায় দেয় ২০১৬-র ২০ জানুয়ারি। কোর্টটা তো আমাদের হাতে নেই। কোর্টটাতো আপনাদের হাতে আছে। একটাও ঘটনা ঘটা উচিত নয়। বাংলার নামে সবাই কুৎসা করে বেড়াচ্ছেন। এটা করে আপনারা আরজি করের ঘটনাকে লঘু করে দিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় সরকারই বলছে কলকাতা সবথেকে নিরাপদ শহর। উত্তর প্রদেশে ৭ লক্ষ, গুজরাটে ৫ লক্ষ নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ডের বিধান আনা হয়েছে এই বিলে। আদালতের অনুমতি ছাড়া যাতে মহিলা বা শিশুর পরিচয় সামনে না আসে, সেটাও বলা আছে বিলে। এই ক্ষেত্রেও আমরা ৩ থেকে ৫ বছরের সাজার প্রস্তাব রাখছি। আপনারা এই সব বলছেন উন্নাওয়ের কথা বলবেন না। হাথরসের ঘটনায় বিচার পায়নি কেউ। এই গুলো ফলিয়ে বলার কথা নয়। ওই সমস্ত ঘটনা লজ্জার। যে বিধায়কের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, যে বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তাকে ফুল মালা দিয়ে সংবর্ধনা! ধর্ষণে উসকানি নয়?’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*