প্রধানমন্ত্রীর মোমবাতি জ্বালানোর আবেদনের বিরোধিতা, অপর্ণার ফেসবুক পোস্ট হঠাৎ উধাও

Spread the love

রবিবার, ৫ এপ্রিল রাত ৯টায় ৯ মিনিটের জন্য দেশবাসীকে ঘরের আলো নিভিয়ে মোমবাতি, প্রদীপ জ্বালানোর আবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর আবেদনের বিরোধিতা করলেন অভিনেত্রী তথা পরিচালক অপর্ণা সেন। সেইসঙ্গে মোদীর আবেদন বয়কটের ডাক দিয়ে ফেসবুকে পোস্টও করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই পোস্ট হঠাৎ উধাও।

ফেসবুকে অপর্ণা লিখেছেন, ‘‘আমার বাড়িতে ৫ তারিখ লাইট বন্ধ থাকবে না… আমাদের এখন বাড়ি, দেশ অন্ধকার করার সময় নয়, মানবজাতির এই অন্ধকার সময়ে আরও একটা সূর্য চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে আবেদন করেছেন যেন তাঁরা ৫ তারিখ করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এই লড়াইকে সমর্থন জানিয়ে বাড়ির আলো নিভিয়ে রাখেন। আমাদের প্রশ্ন, কেন করব এটা?’’

দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য তিনি সরকারকে দায়ি করে লেখেন- ‘ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি যা চলছে তাতে দেশের সরকার পুরোপুরি দায়ী। ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী ও সাধারণ মানুষকে একটা ধোঁয়াশার মধ্যে রাখা হয়েছে। এবং এটা একটা মস্ত বড় প্রহসন। দেশের বেশিরভাগ মানুষ জানেনই না, দেশের এহেন দুরাবস্থায় সরকার সার্বিয়াতে ৯০ টন করোনা টেস্টিং কিট সাপ্লাই করেছে। অথচ দেশের জনগণের গণ-টেস্টিং, যা ইতিমধ্যেই অন্যান্য করোনা আক্রান্ত দেশগুলিতে করানো হয়েছে, তা ভারতে করা হচ্ছে না শুধুমাত্র পর্যাপ্ত টেস্টিং কিটের অভাবে। বিভিন্ন রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই জানিয়েছে যে, তাদের কাছে পর্যাপ্ত কিট নেই’।

এই পোস্টের জেরে মোদী ভক্তদের রোষের মুখে পড়তে হয় অপর্ণা সেনকে।এরপর আচমকাই অভিনেত্রী ফেসবুক প্রোফাইল থেকে গায়েব সেই পোস্ট। অপর্ণা নিজেই সেই পোস্ট ডিলিট করে দিয়েছেন নাকি পোস্টটির বিরুদ্ধে ফেসবুকে একাধিক রিপোর্ট জমা পড়ায় সেটি বাতিল হয়েছে তা পরিষ্কার নয়। যদিও এই প্রথম নয়, এর আগে ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকে জরুরি পরিষেবায় নিযুক্তদের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পরিপ্রেক্ষিতেও প্রধানমন্ত্রীকে পরোক্ষভাবে কটাক্ষ করে একটি টুইট করেছিলেন অপর্ণা সেন।

জাতীয় পুরস্কায় জয়ী অভিনেত্রী টুইটারে প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘ একটা বক্তব্য যদি দশ হাজার করতালিতে দেশকে মুখরিত করতে পারে, তাহলে সেই কন্ঠস্বর কেন নীরব ছিল যখন উত্তর-পূর্ব দিল্লি হিংসার আগুনে পুড়ছিল?’ ধর্মীয় নিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী হলেও বিশ্বজুড়ে এমন করোনা ত্রাসের মধ্যেও জামাতের বিরোধিতা করেছেন অপর্ণা। দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকার ‘তবলিগ-ই-জামাত’-কে ভারতে করোনা বৃদ্ধির জন্য সরাসরি দায়ী করে অপর্ণা সেন টুইটে লেখেন, ‘জামাতের সম্মেলন শুধু মারাত্মক নয়, এটা ‘ক্রিমিন্যাল অ্যাক্ট’, সে কারণে এদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। আমি ধর্মনিরপেক্ষ আর উদারনীতিতে বিশ্বাস করি। কিন্তু আমি এমন কার্যাবলীকে সমর্থন করব না, যা আমার দেশের আইনের বিরুদ্ধে যায়। যে কেউ, হিন্দু, মুসলিম, ক্রিস্টান, শিখ, নাস্তিক, অজ্ঞেয়বাদী (agnostic), সকলের ক্ষেত্রেই এই কথা প্রযোজ্য।’’ টুইটটি ভাইরাল হয়ে যায়।

কেউ বলেন, ‘‘শুধু জামাত নিয়ে কথা বলে কী হবে? মন্দির বা রামনবমী নিয়ে কথা হচ্ছে না কেন?’’ প্রসঙ্গত, এর আগে একাধিকবার মেরুকরণের রাজনীতি নিয়ে গর্জে উঠতে দেখা গিয়েছে দেশের বিদ্বজ্জনদের অন্যতম মুখ অপর্ণা সেনকে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*