১৯৮৬ টু ২০২২। দিয়েগো মারাদোনার পর লিওনেল মেসি। ৩৬ বছরের খরা কাটল আর্জেন্তিনীয় দলে। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্তিনা। এদিন টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারাল নীল-সাদার দল। এই জয়ের ফলে তৃতীয়বার বিশ্ব জয়ের খেতাব ঢুকল আর্জেন্তাইনদের ঘরে। অপরদিকে এই হারের ফলে পরপর দু’বার বিশ্বকাপ জেতা হল না ফ্রান্সের।
ম্যাচে এদিন প্রথম থেকেই চলে আক্রমণ প্রতি আক্রমণের লড়াই। ম্যাচের ১০ মিনিটের মাথায় সুযোগ পেয়ে যায় স্কালোনির দল। তবে গোল করতে ব্যর্থ হয় আর্জেন্তিনা। এরপর ফের আক্রমণে যায় নীল-সাদার দল। দুরন্ত সুযোগ পেয়েছিলেন ডি মারিয়া। কিন্তু তাঁর ডান পায়ের শট বারের অনেক উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। এরপর পাল্টা আক্রমণে যায় ফ্রান্স। তবে ম্যাচের ২২ মিনিটে পেনাল্টি পায় আর্জেন্তিনা। সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে এতটুকু ব্যর্থ হননি মেসি। পেনাল্টি থেকে গোল করে আর্জেন্তিনাকে ১-০ এগিয়ে দেন মেসি। বক্সের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয় ডি মারিয়াকে।
তবে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক। ফুটবল বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাউল হয়নি। তবে মেসি এদিন গোল করতেই রেকর্ড গড়লেন তিনি। আর্জেন্তিনার জার্সি গায়ে ১২টি গোল হল মেসির। আর চলতি বিশ্বকাপে ৬টি গোল করলেন তিনি। এরপর ফের চলে আক্রমণ প্রতি আক্রমণের লড়াই। তবে এরই মধ্যে দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় আর্জেন্তিনা। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে দুরন্ত গোল করে আর্জেন্তিনাকে ২-০ এগিয়ে দেন ডি মারিয়া।মাঝমাঠ থেকে বল পান মেসি। তিনি ডিফেন্সচেরা পাস বাড়ান ম্যাক অ্যালিস্টারকে। তাঁর থেকে পাস পেয়ে চলতি বলে শট নিয়ে গোল করলেন ডি মারিয়া। এরপর আক্রমণে গেলেও গোলের ব্যবধান বাড়াতে পারনি তারা। তাই প্রথমার্ধে ম্যাচের ফলাফল থাকে ২-০।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধেও চলে আক্রমণ প্রতি আক্রমণের লড়াই। ম্যাচের ৫৬ মিনিটে একটি সুযোগ পায় দিদিয়ের দেশঁ-এর দল। তবে গোলের মুখ খুলতে পারেননি তিনি। পাল্টা আক্রমণে যায় আর্জেন্তিনা। ম্যাচের ৫৮ মিনিট সুযোগ পেয়ে যান আলভারেজ। তবে তা বাঁচিয়ে দেন লরিস। এদিন মাঠে মেসির থেকেও বেশি নজর কারেন ডি মারিয়া। গোটা দলটাকে তিনিই খেলালেন। উইং থেকে একের পর এক আক্রমণ তৈরি করেন। তবে ৬৪ মিনিটে পরিবর্তন করেন স্কালোনি। ডি মারিয়াকে তুলে আকুনাকে নামান তিনি।
এরপর ফের আক্রমণে ঝাঁপায় ফ্রান্স। এরই মধ্যে ম্যাচের ৮০ মিনিটে পেনাল্টি পায় ফরাসিরা। আর সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে এতটুকু ভুল করেননি এমবাপে। পেনাল্টি থেকে গোল করে ফ্রান্সের হয়ে ১-২ করেন তিনি। এরপর যেন অক্সিজেন পেয়ে যায় দেশঁ-এর দল। যার ফলে ম্যাচের ৮২ মিনিটে সমতা ফেরে ফ্রান্স। ফ্রান্সের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন সেই এমবাপে। এই গোলের সুবাদে চলতি বিশ্বকাপে ৭ টি গোল করেন গোল্ডেন বুটের দাবিদার হয়ে গেলেন তিনি। এরপর চলে আক্রমণ প্রতি আক্রমণের লড়াই। তবে নির্ধারিত সময়ে ম্যাচের ফলাফল না আসায় ম্যাচ গড়ায় এক্সট্রা টাইমে। ম্যাচের ১০৮ মিনিটে গোল করে আর্জেন্তিনার হয়ে ৩-২ করেন মেসি। মেসির এই গোলের সুবাদে রেকর্ড গড়েন লিও। জাতীয় দলের হয়ে ১৩ গোল করলেন তিনি। এছাড়াও গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে ফের নেমে পড়েন লিও।
এরপর ম্যাচ ১১৮ মিনিটে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। আর সেই সুযোগের সৎ ব্যবহার করেন এমবাপে। ফ্রান্সের হয়ে সমতা ফেরান সেই এমবাপে। চলতি বিশ্বকাপে ৮ গোল হল ফরাসি তারকা ফুটবলারের। আর এই সুবাদে গোল্ডেন বুটের দাবিদার হয়ে গেলেন তিনি। শেষমেশ এক্সট্রা টাইমে ম্যাচের ফলাফল না আসায়, ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারাল আর্জেন্তিনা।
Be the first to comment