ছোটো শিশুর মাকে প্রশ্ন- এলেম আমি কোথা থেকে? মা উত্তর দেয় ইচ্ছে হয়ে ছিলি মনের মাঝারে। নারী-পুরুষ বিশেষত মায়েরা গর্ভবতী হওয়ার পর থেকেই নতুন সৃষ্টিকে পৃথিবীর আলো দেখানোর স্বপ্নে মশগুল হয়ে থাকে।
অর্পিতা হল এরকমই একজন মেয়ে। বেলেঘাটায় বাপের বাড়ি। স্বামীর সঙ্গে থাকতেন লুধিয়ানায়। আমাদের প্রাচ্যের দেশগুলিতে বিশেষত ভারত তথা বাংলায় মেয়েরা গর্ভবতী হলে বাপের বাড়িতে আসে বিশ্রামের জন্য। অর্পিতাও তেমনি লুধিয়ানা থেকে ৬ মাসের গর্ভবতী অবস্থায় কলকাতার বেলেঘাটায় আসে। পাঠক হয়তো ভাবছেন এর মধ্যে বিশেষত্ব কী? এমন তো বহু মেয়েরই হয়। এখানেই অর্পিতা ব্যতিক্রমী। এইসময় শুধু বিশ্রাম না নিয়ে অর্পিতা ছোটো ছোটো ফুলদানীর মতো পাত্রের উপর ফুটিয়ে তোলে তাঁর অঙ্কন শৈলী। একদিকে গর্ভস্থ শিশুকে আবাহন জানানো, অন্যদিকে একের পর এক তুলির ছোঁয়ায় নতুন কিছু সৃষ্টি করা।
সন্তান জন্ম দেওয়ার শত স্বপ্নের মাঝেও থেমে থাকেনি অর্পিতা। ছোটবেলা থেকে সে আঁকা শিখেছে স্থানীয় অঙ্কন নামক একটি সংস্থায়। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগের দিন অবধিও করে গিয়েছে এই কাজ। না, কোনও অর্থের জন্য বা পারিপার্শ্বিক চাপের জন্য নয়। নিছকই সৃষ্টির তাগিদে একাজ করেছে সে। এখন শিশু ভূমিষ্ঠ হয়েছে অর্পিতার। তাতেও কাজ ছাড়েনি সে। শিশুকে সময় দিয়েও সে চালিয়ে যাচ্ছে তাঁর শৈল্পিক কাজ। দুই সৃষ্টি কেউই অবহেলিত নয় তার কাছে। এখন মনে হচ্ছে এই পাত্রগুলির সঠিক বিপণন হলে একটু ভালো হয়। যদি তা না ও হয় তাও তিনি এই কাজ চালিয়ে যাবেন। একদিকে তাঁর এক সৃষ্টি তাঁর সন্তান আর অন্যদিকে তার একের পর এক তুলির ছোঁয়ায় অপূর্ব সব সৃষ্টিশৈলী। এই দুই সৃষ্টি সুখের উল্লাসে এখন মেতে আছে অর্পিতা।
ছবি- (প্রশান্ত দাস)
Be the first to comment