দিল্লি হয়ে নেপাল ঘুরতে এসে আর দেশে ফিরে যাননি এক রুশ নাগরিক। ওই ব্যক্তির নাম সেরগেই ডেমিন ওরফে রেগজিন (৪৬)। প্রায় ৮ বছর ধরে তিনি রাশিয়া ছাড়া। বিনা ভিসাতেই তিনি ভারতে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। দিল্লি, কলকাতা, শিলিগুড়ি হয়ে তাঁর নেপালে যাতায়াত ছিল। এ ভাবে অবৈধ ভাবে প্রায় ৫ বছর ভারতে অস্থায়ী ঠিকানা বানিয়েছিলেন তিনি। তবে শেষরক্ষা হল না।
এতদিন কার্যত আত্মগোপন করে থাকলেও ধরা পড়ে গেলেন তিনি। নেপাল থেকে ভারতে আসার পথে সীমান্তের পানিট্যাঙ্কি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সন্দেহবশত এস এস বি জওয়ানেরা তাঁকে তল্লাশি করে। তাঁর কাছে একটি পাসপোর্ট পাওয়া যায়। তবে সেই পাসপোর্টে লাগানো ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এরপরই তাঁকে আটক করে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। খড়িবাড়ি থানা থেকে পুলিস এসে তাকে গ্রেফতার করে।
ভিসার মেয়াদ পার হয়ে যাওয়ার পরও কোনও বিদেশি এভাবে থাকতে পারেন না। তাই অবৈধ বসবাসের দায়ে তাঁকে আটক করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে নেপাল সীমান্তের বীরতামোড় দিয়ে এপারে পানিট্যাঙ্কি আসেন ওই রুশ নাগরিক। মেচি নদীর সেতু পার হয়ে ভারতে ঢুকতেই সীমান্ত প্রহরায় থাকা এস এস বি জওয়ানেরা তাঁকে আটক করে। প্রথমে ওই ব্যক্তি তাদের এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তারপরই এস এস বি তাকে আটক করে। ধৃত ব্যক্তি বাংলাতে কথা বলতে পারেন। ভাল হিন্দি জানেন। নেপালিতেও কথা বলতে পারেন। তিনি পুলিশকে জানান, নেপালেই তিনি বেড়াতে আসেন। ২০১১ সালে দিল্লি বিমানবন্দরে নেমে প্রথমে নেপালে যান। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর শেষের দিকে নেপালের দক্ষিণ কালী এলাকায় থাকতে শুরু করেন।
জানা গেছে, সেখান থেকে তিনি শিলিগুড়ি হয়ে কলকাতা যাতায়াত করতেন। তিনি পুলিশ ও এস এস বি’র কাছে দাবি করেন, ২০১৪ সালে ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তিনি আর রাশিয়া ফিরে যেতে পারেননি। এরপরই নেপালে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। নেপাল থেকেই তিনি কলকাতা গেছেন অনেকবার। সেখানে সংস্কৃত ভাষার পাঠ নিচ্ছিলেন। এবারও সেই জন্যই কলকাতা যাচ্ছিলেন বলে পুলিশকে জানান তিনি। পুলিশ ওই ব্যক্তির কাছ থেকে ৬০ হাজার ৪৭৬ টাকা উদ্ধার করেছে। এক সঙ্গে এত টাকা কোথা থেকে এল তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে পুলিশ। এই ব্যক্তির সঙ্গে বাইরের যোগাযোগ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেইসঙ্গে এখানে কী কাজ করতেন এবং ভিন্ন কোনও উদ্দেশ্য ছিল কিনা দেখা হচ্ছে।
Be the first to comment