সোমবার সকালেই বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারকে ১৯৮৪ সালের শিখ দাঙ্গার অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ শুনিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। তার পরেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, পাপের শাস্তি হবেই। কংগ্রেস ও গান্ধী পরিবারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা এতদিন অভিযুক্তদের রক্ষা করে এসেছে।
তাঁর কথায়, দিল্লি হাইকোর্টে সজ্জন কুমার শাস্তি পাওয়ায় ন্যায়বিচার হল। কংগ্রেস ও গান্ধী পরিবারকে ’৮৪-র পাপের জন্য শাস্তি পেতেই হবে। কংগ্রেস দাঙ্গার কথা ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল। এনডিএ প্রশাসনের বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে এনেছে।
২০১৩ সালে নিম্ন আদালতে শিখ দাঙ্গার অভিযোগ থেকে মুক্তি পান সজ্জন কুমার। কিন্তু দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন পাঁচজন। তাঁরা হলেন প্রাক্তন কাউন্সিলার বলবান খোক্কর, প্রাক্তন বিধায়ক মহেন্দ্র যাদব, কিষাণ খোক্কর, গিরিধারী লাল ও ক্যাপটেন ভগমল।
সজ্জন কুমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ও অপর পাঁচজন দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় পাঁচজনকে খুন করার জন্য দায়ী। নিহতেরা হলেন কেহর সিং, গুরপ্রীত সিং, রঘুবেন্দর সিং নরেন্দ্র পাল সিং এবং কুলদীপ সিং। এক জনতার হাতে তাঁরা খুন হন।
সিবিআইয়ের অভিযোগ, খুব ছক কষে জনতাকে শিখদের খুন করার জন্য প্ররোচিত করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী নিহত হওয়ার পরে একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়কে নিকেশ করে ফেলাই উদ্দেশ্য ছিল।
১৯৮৪ সালের জুন মাসে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে শিখ জঙ্গিদের ঘাঁটি ভেঙে দেওয়ার জন্য সেনা অভিযান হয়। তার নাম অপারেশন ব্লু স্টার। সেই অভিযানের বদলা নেওয়ার জন্য ৩১ অক্টোবর সকালে দুই দেহরক্ষী সতবন্ত ও বিয়ন্ত সিং ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা করে। অভিযোগ, সেদিন রাতেই সজ্জন কুমার ও আরও কয়েকজন কংগ্রেস নেতা কংগ্রেস সমর্থকদের জড়ো করে অস্ত্রশস্ত্র বিলি করেন। তাদের মদের বোতল ও টাকাও দেওয়া হয়।
সজ্জনরা ঘোষণা করেন, যে শিখদের হত্যা করতে পারবে, তাকে বিশেষ পুরস্কার দেবেন।
১ নভেম্বর থেকে পরবর্তী কয়েকদিনে শুধু দিল্লিতেই খুন হন ৩ হাজার শিখ। দেশের আরও ৪০ টি শহরে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। আট থেকে ১৭ হাজার শিখ খুন হন। সজ্জন কুমার বাদে অপর যে কংগ্রেস নেতার নামে শিখ দাঙ্গায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আছে, তিনি হলেন জগদীশ টাইটলার। অকালি দল ঘোষণা করেছে, সজ্জন কুমারের শাস্তি হওয়ায় তারা খুশি। কিন্তু জগদীশ টাইটলার যাতে শাস্তি পান, সেজন্যও চেষ্টা চালানো হবে।
Be the first to comment