ওয়াইসি কাটছেন মুসলিম ভোট, পরবর্তী টার্গেট বাংলা

Spread the love

বিজেপির কট্টর সমালোচক হয়ে প্রকাশ্যে এলেও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেই আসাদউদ্দিন ওয়াইসিকে গেরুয়া শিবিরের ‘সিক্রেট এজেন্ট’ হিসেবে কটাক্ষ করে থাকেন। বিহার বিধানসভা নির্বাচনেও ওয়াইসির এমআইএম যেভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল, তাতে অনেকেই বলেছিলেন বিরোধীদের নিশ্চিত মুসলিম ভোট ব্যাংকেই থাবা বসাবেন ওয়াইসি। আবার নীতীশ কুমারের দিকেও যে মুসলিম ভোট রয়েছে, তাতেও ভাগ নেবেন আসাদউদ্দিন। বাস্তবেও দেখাও যাচ্ছে তাই।

ওয়াইসি সাফ জানিয়েছেন এবার বাংলা ও উত্তরপ্রদেশে আমরা লড়াই করব। এর জন্য আমাদের কারও অনুমতি নিতে হবে না। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বাংলায় আসছে মিম।

বিহারের শেষ দফা ভোটের আগেই এমআইএম প্রধান ওয়াইসি প্রচারে রীতিমতো ঝড় তুলেছিলেন। আড়ালে ওয়াইসিকে নিয়ে চিন্তা গোপন করেনি আরজেডি-কংগ্রেস শিবির। বিহারের তৃতীয় দফার ভোটের আসনগুলিতেই সবচেয়ে বেশি মুসলিম ও উর্দুভাষী মানুষ সবথেকে বেশি ছিলেন। কিষানগঞ্জ, পূর্ণিয়ার মতো বিহারের মুসলিম অধ্যুষিত সীমান্ত এলাকায় ওয়াইসি জোরদার প্রচারে নেমেছিলেন। এগিয়ে যাচ্ছে বিজেপি। এমনকী বেশ কয়েকটি জায়গায় নীতীশ কুমারের দলের মুসলিম ভোট ব্যাংকেও থাবা বসিয়েছে এমআইএম। ফলে এখনও পর্যন্ত জোটবদ্ধভাবে সরকার গড়ার জায়গায় থাকলেও ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে নীতীশ কুমারের শক্তি।

আর বিহার ভোটের সূত্রেই চলে আসছে সামনের বছর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটের কথা। আর এখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের মুসলিম ভোট ব্যাংকে থাবা বসানোর জন্যে সেই ওয়াইসিকেই বিজেপি পুরোদমে নামাতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এমন দাবি যে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না, তার কারণ ইতিমধ্যেই ওয়াইসি জানিয়ে দিয়েছেন বাংলার ভোটে তাঁর দল পুরোদমে লড়বে। কলকাতা-সহ বাংলার একাধিক জায়গায় ইতিমধ্যেই মিছিল-মিটিং-সভা তো করছেই এমআইএম, এমনকী তলেতলে সংগঠন গোছানোর কাজও করতে শুরু করেছে। বিশেষত মুর্শিদাবাদের মতো সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলা, উত্তরবঙ্গের একটা বড় অংশে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে এমআইএম। যোগাযোগ বাড়ানো হচ্ছে ফুরফুরা শরীফের সঙ্গেও।

পরিস্থিতি বুঝে স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে উস্কানি দেওয়া নিয়ে এই সংখ্যালঘু নেতাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি স্বয়ং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজনকে আসাদউদ্দিনের থেকে দূরে থাকার বার্তা দিয়ে উগ্র মৌলবাদের বিরুদ্ধে তোপও দেগেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নাম না করে আসাদউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন এআইএমআইএমকে আক্রমণ করেছেন তিনি। বিজেপির কাছ থেকে টাকা নিয়ে সংখ্যালঘুদের মধ্যে এই দলটি উত্তেজনা তৈরি চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ মমতার।

অপরদিকে, মমতার সরকারের বিরুদ্ধে আসাদউদ্দিন বলেছেন, বাংলার মুসলিমদের হাল যে কোনও সংখ্যালঘু সমাজের তুলনায় মানব উন্নয়ন সূচকের মাপকাঠিতে সবচেয়ে খারাপ, এটা বলা মোটেই ধর্মীয় কট্টরপন্থা, অসহিষ্ণুতা নয়। দিদি আমাদের মতো হায়দরাবাদের কিছু লোককে নিয়ে এতই উদ্বিগ্ন হয়ে থাকলে তাঁর বলা উচিত, কী করে বিজেপি বাংলায় ৪২টার মধ্যে ১৮টা আসন জিতল! অর্থাৎ ছক স্পষ্ট। সেই ছকে বিহারে পদ্মফুলের ভিত মজবুত করছে বিজেপি, এরপরে কি বাংলাতেও লাগু হবে এই একই ফর্মুলা?

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*