কংগ্রেসের জাতীয় সভাপতি হতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ খোয়াতে বসেছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। সভাপতি হওয়া ও মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেবেন কি না, তা নিয়ে দলের অন্দরেই বিদ্রোহ শুরু হওয়ায় চরম ক্ষুব্ধ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। জল্পনা ছিল, গান্ধী পরিবার বেজায় চটেছেন তাদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত অশোক গেহলটের উপরে। সভাপতি নির্বাচন থেকে বাদ পড়ার পাশাপাশি এবার তিনি মুখ্যমন্ত্রী পদও খোয়াতে পারেন তিনি, এমন জল্পনাও শুরু হয়েছিল। শীর্ষ নেতৃত্ব চটলেও, আপাতত চিন্তার কারণ নেই অশোক গেহলটের। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর গদি আপাতত তাঁরই থাকছে বলে জানা গিয়েছে। তবে শাস্তি পাবেন গেহলট ঘনিষ্ঠ তিন বিধায়ক। দলের অন্দরে বিদ্রোহের পরিকল্পনা ও সূচনা করায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, রাজস্থানের সঙ্কট নিয়ে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে যে পর্যবেক্ষক দল পাঠানো হয়েছিল, তারা দলনেত্রী সনিয়া গান্ধীর কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। ওই রিপোর্টে তাঁরা উল্লেখ করেছেন, সভাপতি নির্বাচন ও মুখ্যমন্ত্রী হওয়া নিয়ে দলের অন্দরে যে বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল, তার জন্য দায়ী নন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। তিনি সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হলে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন সচিন পাইলট, এই জল্পনা শুনেই গেহলট ঘনিষ্ঠ তিন বিধায়ক গোটা ইস্তফার নাটকের চিত্রনাট্য রচনা করেছিলেন। তাদের কখা মেনেই ৯২ জন বিধায়ক ইস্তফা দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।
রাজস্থান সরকার নিয়ে ডামাডোল শুরু হতেই গোটা পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট তলব করেছিলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। মঙ্গলবার তাঁর কাছে এই রিপোর্ট জমা দেন দুই পর্যবেক্ষক মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং অজয় মাকেন। তাদের রিপোর্টেই গেহলটের বদলে, তাঁর ঘনিষ্ঠ তিন বিধায়কের নাম উল্লেখ করা হয়েছে সঙ্কট তৈরির জন্য। ওই তিন বিধায়ক হলেন, রাজস্থানের নগরোন্নয়ন, আবাসন ও পরিষদীয় মন্ত্রী শান্তি ধারিওয়াল, কংগ্রেস পরিষদীয় দলের চিফ হুইপ মহেশ জোশী এবং রাজ্য পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান ধর্মেন্দ্র পাঠক।
সনিয়া গান্ধীকে দেওয়া রিপোর্টে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে আগামী ১০ দিনের মধ্যে ওই তিন নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশও করা হয়েছে। কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতেই পর্যবেক্ষকদের সুপারিশ মেনে শো-কজ নোটিস পাঠানো হয়েছে ওই তিন নেতাকে। ১০ দিনের মধ্যে তাদের জবাবদিহি করতে বলা হয়েছে। পর্যবেক্ষক অজয় মাকেন তাদের আচরণকে কংগ্রেসের শৃঙ্খলাবিরোধী বলেই অ্যাখ্যা দিয়েছেন।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই তিন বিধায়কই আলাদাভাবে গেহলট ঘনিষ্ঠ বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন। ওই বৈঠকে তারা প্রস্তাবনা পেশ করেন যে সচিন পাইলট নয়, ২০২০ সালে যখন সরকার ভাঙনের মুখে পড়েছিল, তা থেকে রক্ষার জন্য যারা সরকারকে সমর্থন জানিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেছে নেওয়া হয়।
Be the first to comment