এখনও দগদগে পাঁচ বাঙালিকে হত্যা করার ক্ষত। এর মধ্যেই সোমবার অসমের ডিটেনশন শিবির থেকে হাসপাতালে আনা দুই ‘বন্দি’ বাঙালিকে হাতকড়া পরিয়ে বেঁধে রাখার ছবি সামনে এসেছে। ফের প্রশ্ন উঠেছে নাগরিক ও মানবিক অধিকার নিয়ে।
গুয়াহাটির বাসিন্দা প্রৌঢ় কৃষ্ণ সরকারকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল ২৯ অক্টোবর। কারণ এনআরসি-তে নাম উঠলেও তাঁকে ডি-ভোটার বলে দাগিয়েছে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। আদালতে তোলার পরে কৃষ্ণকে গোয়ালপাড়া ডিটেনশন শিবিরে পাঠানো হয়। পথেই অসুস্থ বোধ করেন তিনি। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে গোয়ালপাড়া সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন কৃষ্ণকে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়। সেই ছবি সামনে এসেছে।
আবার, বঙাইগাঁওয়ের বাসিন্দা রতনচন্দ্র বিশ্বাসের নাম ডি-ভোটারের তালিকায় উঠেছিল দু’বছর আগে। পুলিশ গ্রেফতার করে তাঁকে গোয়ালপাড়া ডিটেনশন শিবিরে পাঠিয়ে দেয়। সম্প্রতি তাঁর গ্যাস্ট্রিক আলসারের অস্ত্রোপচার হয় গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজে। ‘বন্দি’ রতনকে হাতকড়া পরিয়ে হাসপাতালের জানলার সঙ্গে বেঁধে রাখার ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে।
প্রতিবাদের মুখে দু’জনেরই হাতকড়া খোলা হয়েছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে কেন পুলিশ তাঁদের হাতকড়া পরিয়ে রেখেছিল, সেই প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে। সংবিধান বলেছে, পলায়ন-প্রবণ বিপজ্জনক আসামির ক্ষেত্রে আদালত অনুমতি দিলে বন্দিকে হাতকড়া পরানো যেতে পারে কেবল। এ ছাড়া হাতকড়া না-পরানোর কথাই বলে আদালত। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশও সে কথাই বলে। সেখানে কৃষ্ণ আর রতনের মতো অসুস্থ মানুষকে কেন হাতকড়া পরানো হল, তা-ও আবার সরকারি হাসপাতালে?
গুয়াহাটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বিষয়টি তাঁরা জানতেন না। তবে পুলিশের কাজে তাঁরা হস্তক্ষেপ করেন না। পুলিশের পাল্টা বক্তব্য, এক জন কনস্টেবলের পক্ষে দিনরাত বন্দি রোগীর পাশে বসে থাকা সম্ভব নয়। তাই আলগা করে হাতকড়া পরানো হয়েছিল।
Be the first to comment