বিক্ষোভ জারি অসমে, কারফিউ মেঘালয়ের একাধিক জায়গায়

Spread the love

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে জ্বলছে অসম। একাধিক মিছিল, বনধ, বিক্ষোভের জেরে কার্যত স্তব্ধ রাজ্য। ইতিমধ্যে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। প্রভাব পড়েছে মেঘালয়েও। দু’দিনের জন্য বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা। জারি করা হয়েছে কারফিউ। অন্যদিকে, ৫ ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়েছে ডিব্রুগড়ে।

বিক্ষোভ চরম আকার নিয়েছে মেঘালয়ে। দু’দিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। শিলংয়ের একাধিক জায়গায় জারি করা হয়েছে কারফিউ। বিক্ষোভ চলাকালীন শিলংয়ের দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। বনধের জেরে শিলংয়ের পুলিশ বাজার এলাকায় সমস্ত দোকানপাট বন্ধ । শহরের রাস্তায় টর্চ র‌্যালি করে ক্ষুব্ধ জনতা । শিলং থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরে উইলিয়ামনগরে মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমাকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয়রা । চপার থেকে নেমে একজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর মৃত্যু বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় তাঁর কনভয়ের সামনে স্লোগান ওঠে কনরাড গো ব্যাক । মেঘালয় পুলিশ টুইটবার্তায় মানুষজনকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন । পাশাপাশি বলা হয়েছে, কেউ যেন কোনও ভুল তথ্য না ছড়ায় ।

এই অবস্থায় বাংলাদেশ হাই কমিশন ভারতের কাছে নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভারতের হাই কমিশনার রিভা গাঙ্গুলি বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের সচিব কামরুল এহসানের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। এহসান জানিয়েছেন, চানসেরির কাছে চেকপোস্টে ভাঙচুর চালানো হয় । তার ঠিক একদিনই পর বিক্ষোভের সময় বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনারের কনভয়ের উপর হামলা চালায় ক্ষুব্ধ জনতা। এরপর ভারতীয় কমিশনারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দিয়ে বলা হয়, গুয়াহাটিতে বাংলাদেশের হাই কমিশনারের বাসভবনের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হবে। একই সঙ্গে নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও।

তবে ত্রিপুরায় বড় কোনও ঘটনা ঘটেনি । আগরতলায় দোকানপাট বন্ধ । সমস্ত স্কুল কলেজ সরকারি অফিসও বন্ধ রয়েছে । এদিকে, অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল অল অসম স্টুডেন্ট ইউনিয়ন (AASU)-র ও অন্য সংগঠনগুলির পক্ষ নিয়ে বলেন, “এই হিংসাত্মক কাজ, ভাঙচুর AASU-র DNA-তে নেই । এইসব কার্যকলাপের পিছনে অন্য কেউ রয়েছে । আমি জানি কোনও অনুপ্রবেশকারী দল এই কাজ করছে । আমরা তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।”

সোমবার লোকসভায় CAB পাশ হওয়ার পর থেকেই অসম ও ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্য রাজ্যগুলিতে প্রতিবাদ বিক্ষোভ শুরু হয় । বুধবার রাতে রাজ্যসভাতেও বিলটি পাশ হয় । কারফিউ জারি করা হয় গুয়াহাটি ও ডিব্রুগড়ে । অসমের ১০টি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে । নামানো হয়েছে আধা-সেনা । বিক্ষোভ আন্দোলনে প্রধান ভূমিকা নিয়েছে গুয়াহাটির কটন বিশ্ববিদ্যালয়, গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়, তেজপুর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের ছাত্ররা । রাজ্যে বন্ধ রাখা হয়েছে ট্রেন চলাচল । বিমান পরিষেবাও বন্ধ । বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে ডিব্রুগড়,গুয়াহাটি, জোরহাট, তিনসুকিয়া সহ একাধিক এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে । আজ কারফিউ উপেক্ষা করে রুক্মিণীগাঁও ও হাতিগাঁওতে মিছিল করে বিক্ষোভকারীরা । পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে । শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গুলি চালায় পুলিশ । গুলিতে মৃত্যু হয় দু’জনের ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*