অসমে নাগরিকপঞ্জী নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাত আরও এক ধাপ এগিয়ে দিলেন মমতা

Spread the love
অসমে নাগরিকপঞ্জী নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে সংঘাত আরও এক কদম এগিয়ে নিয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার এ নিয়ে দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকও করেন তৃণমূল নেত্রী। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করে অসমের ৪০ লক্ষ মানুষের নাম নাগরিকপঞ্জী থেকে বাদ পড়ার বিষয়ে প্রতিবাদ করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে মমতা সাংবাদিকদের বলেন, “মুর্শিদাবাদের বহু মানুষকে বের করে দেওয়া হয়েছে। নাগরিকপঞ্জীর নামে ‌যা করা হচ্ছে তা ঠিক নয়। তাঁদের ‌যদি পরিচয়পত্র না থাকে, তাহলে এতদিন ধরে তাঁরা কীভাবে রাজ্যের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেলেন? এ নিয়ে আমি বহু নথি রাজনাথ সিং-এর কাছে জমা দিয়েছি”।
উল্লেখ্য, দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফকরুদ্দিন আলি আহমেদের পরিবার-সহ অসমের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের পরিচয় সংক্রান্ত নথি এদিন তিনি রাজনাথের কাছে জমা দেন। দেখান, কীভাবে ওইসব ‘বৈধ নাগরিকদে’র খসড়া তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি অনুরোধ করেন, নাগরিকপঞ্জী তৈরির নামে ‌যেন কারও উপরে অত্যাচার না করা হয়। এক সময় দুটি দেশ একই ছিল। কাজের প্রয়োজনে অনেক মানুষ দুই দিকেই ‌যাতায়াত করতেন। এখন ‌যেন ভারত থেকে কাওকে বের করে না দেওয়া হয়।
তৃণমূল নেত্রী এদিন রাজনাথ সিং-কে রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কেও অবহিত করেন। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান, রাজ্যের কিছু বিজেপি নেতা না কি বলছেন অসমের পর এবার নাগরিকপঞ্জীর ক্ষেত্রে টার্গেট পশ্চিমবঙ্গ। তিনি জানতে চান, বিজেপি নেতাদের এই উদ্ধত্য হয় কীভাবে। আজ অসম, কাল বাংলা, একসময় বলা হবে বিহারেও নাগরিকপঞ্জী তৈরি হবে। এ জিনিস চলতে দেওয়া ‌যায় না। এভাবে চললে গৃহ‌যুদ্ধ হবে। বলে তোপ দাগেন মমতা। শাসক দলের এই ধরনের মন্তব্য করা ঠিক নয় বলেও প্রবীণ বিজেপি নেতা তথা সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ রাজনাথের কাছে এদিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা। প্রসঙ্গত, এদিন পশ্চিমবঙ্গেও নাগরিকপঞ্জী তৈরি করা হবে বলে মন্তব্য করেন রাজ্য বিজেপি-র সাভাপতি দিলীপ ঘোষ।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার রাজনাথ সিং এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, অসমে নাগরিকপঞ্জী তৈরি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধায় আজ আমার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। তাঁকে বলেছি, নাগরিকপঞ্জীর নামে কারও উপর অত্যাচার করা হবে না। আইন মেনে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে ওই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। কোনও অভিযোগ থাকলে তা শোনার ব্যবস্থাও রয়েছে। সুপ্রিম কোটের নজরদারিতেই ওই তালিকা তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, এদিন বিজেপিকে কার্যত তুলোধনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, নাগরিকপঞ্জীর নামে বিজেপি ‌যা করছে তাতে দেশে গৃহ‌যুদ্ধ লেগে ‌যাবে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, কোন ভিত্তিতে অসমের ৪০ লাখ মানুষ নাগরিকপঞ্জী থেকে বাদ পড়লেন তা স্পষ্ট করা হয়নি। দলিত, খ্রিষ্টান, মুসলিম হলেই তাদের আলাদা করা হচ্ছে বলে তোপ দাগেন মমতা। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলে দেন, “বাংলায় এসব হতে দেব না”। তবে এদিন মমতাকেও পাল্টা নিশানা করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, একমাত্র বিজেপিই অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কথা বলে। দেশের নিরাপত্তার থেকে কোনওকিছুই বড় নয়। অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান কী, তা স্পষ্ট করুক তৃণমূল।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*