নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে উত্তাল অসম৷ বিলের প্রতিবাদে সোমবার থেকেই উত্তপ্ত উত্তর-পূর্বের একাধিক রাজ্য৷ অসম, ত্রিপুরা, মণিপুরে রাস্তায় নেমে চলছে বিক্ষোভ-আন্দোলন৷ রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে চলছে অবরোধ৷ অসমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ অসমের বাসিন্দাদের উদ্দেশে টুইটে শান্তি বজায় রাখতে আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী৷ টুইট করে মোদী বলেন, ‘আমরা আপনার অধিকার রক্ষা করব৷ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই৷ আপনার অধিকার ও পরিচয় এবং সুন্দর সংস্কৃতি আপনাদের থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারে না’৷ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমি সংবিধান অনুযায়ী কাজ করব৷ অসমের বাসিন্দাদের রাজনৈতিক, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক এবং ভূমির অধিকার রক্ষার জন্য আমরা সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’৷
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের সবচেয়ে বেশি প্রতিবাদ অসমে৷ গত কয়েকদিন ধরেই চরম উত্তেজনা উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে৷ নাগরকিত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে ক্ষোভের আগুনে ফুঁসছে অসম৷ রাজ্যের একাধিক সংগঠনের তরফে প্রতিবাদের পৃথক পৃথক কর্মসূচি গোটা অসম জুড়ে৷ ক্ষোভ সামাল দিতে বুধবার থেকে অসমে জারি কারফিউ৷ অসমে ২০ কোম্পানি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে৷ দিসপুর, জোড়হাট, বঙ্গাইগাঁও, নওগাঁও-সহ অসমের একাধিক শহরের রাস্তায় রাস্তায় পুলিশি টহল৷ পুলিশের সঙ্গে টহলদারি সেনারও৷ অসমের ১০ জেলায় বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট ও এসএমএস পরিষেবা৷ অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মোকাবিলায় সচেষ্ট অসম সরকার৷ নিয়মিত পরিস্থিতি নিয়ে কথা চলছে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে৷ অসম পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে প্রতিবাদ চলছে মণিপুর, ত্রিপুরায়৷ গত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত বিজেপিশাষিত ত্রিপুরা৷ রাজধানী আগরতলা, কাঞ্চনপুর, ধর্মনগর, কুমারঘাট, বদরহাট-সহ ত্রিপুরার একাধিক শহরে চলছে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ৷ একাধিক ছাত্র সংগঠন বিক্ষোভে সামিল৷ রাস্তায় নেমে প্ল্যাকার্ড হাতে চলছে বিক্ষোভ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ত্রিপুরাতেও ২ কলম সেনা মোতায়েন করা হয়েছে৷
লোকসভার পর বুধবার রাজ্যসভায় পাস হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল৷ বুধবার দিনভর বিল নিয়ে রাজ্যসভায় চলে আলোচনা৷ আলোচনার জন্য ৬ ঘণ্টা বরাদ্দ থাকলেও তা চলে প্রায় ৯ ঘণ্টা ধরে৷ বিলের প্রতিবাদে সরব হয় কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ একাধিক রাজনৈতিক দল৷ বিলের কিছু কিছু অংশ নিয়ে আপত্তি ছিল শিবসেনার৷ বিলে সংশোধনের দাবি তোলেন সেনার সাংসদরা৷ শিবসেনার আবেদন গৃহীত না হওয়ায় অধিবেশন ওয়াকআউট করেন সেনার সাংসদরা৷ শেষমেশ ১২৫ সাংসদের সমর্থনে রাজ্যসভাতেও পাস হয়ে যায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল৷ বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেন ১০৫ সাংসদ৷
Be the first to comment