কৃষি আইন বাতিলের প্রস্তাব আনতে বিধানসভার অধিবেশন ডাকার কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী । আর তাতে বিরোধীদের নৈতিক জয় হয়েছে বলে মনে করছেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী ।
বিধানসভায় দু’দিনের বিশেষ অধিবেশন বসাতে চায় রাজ্য সরকার । কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইন বাতিলের প্রস্তাব আনতে বিরোধীরা দীর্ঘদিন ধরে সরব হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীকে একাধিকবার আবেদন জানানো হয়েছিল কংগ্রেস এবং বামেদের তরফে । আর এবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, অতি দ্রুত বিধানসভায় দু’দিনের অধিবেশন ডাকার জন্য অধ্যক্ষের কাছে আবেদন জানাবেন ।
সাংবিধানিক পদ্ধতি মেনে অধ্যক্ষ রাজ্যপালের কাছ থেকে সমন চাইবেন। তারপরই দিনক্ষণ স্থির করে দুদিনের জন্য অধিবেশন বসানো হবে। যে অধিবেশনে কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন কৃষি আইন এই রাজ্যে বাতিল করার প্রস্তাব গ্রহণ করে তা দিল্লিতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। অর্থাৎ সেই প্রস্তাবে রাজ্যপালের সম্মতিও চাওয়া হবে ।
বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত বিধানসভার অধিবেশনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি । তবে চলতি সপ্তাহেই দিনক্ষণ চূড়ান্ত করে অধিবেশন বসানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে ।
বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস পরিষদীয় দলের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিধানসভার অধিবেশন বসানোর জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল একাধিকবার । বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান বলেন, বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী কৃষি ও শ্রম আইন গোটা দেশের সঙ্গে আমাদের রাজ্যের কৃষক, শ্রমিক সহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের উপর দুর্যোগ নিয়ে এসেছে। যার প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া রাজ্য সরকারের আশু কর্তব্য ।
ইতিমধ্যে পঞ্জাব, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, দিল্লি, কেরালার মতো রাজ্য নিজ নিজ বিধানসভায় প্রস্তাব ও প্রতিরোধমূলক আইনি ব্যবস্থা পাশ করিয়েছে । পূর্বে কেন্দ্রীয় বিভিন্ন আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব গ্রহণের নজির এই রাজ্যের বিধানসভার রয়েছে । জরুরি বিষয় সমূহের উপর সুনির্দিষ্ট আলোচনা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের জন্য রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন অবিলম্বে আহ্বান করার দাবি তুলেছেন বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী।
মুখ্যমন্ত্রীর বিলম্বে বোধোদয় হয়েছে বলে মন্তব্য বিরোধীদের । তবে জরুরি কেন্দ্রীয় কৃষি আইন এরাজ্যে বাতিল করা না হলে এ রাজ্যের কৃষি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে বলে মন্তব্য বিরোধীদের ।
আবদুল মান্নানের আশঙ্কা, শেষ পর্যন্ত এই প্রস্তাব কতটা গৃহীত হবে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছায় তা দেখবার । কারণ বিজেপির বি টিম হিসেবে এই রাজ্যে রয়েছে তৃণমূল। হয়ত দেখা যাবে সেই প্রস্তাবের মধ্যে এমন কোনও শব্দ লেখা থাকবে যাতে বিরোধীরা সায় দিতে পারবে না । তখনই শুরু হবে বাকবিতণ্ডা । তিনি বলেন,”আশা করি সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। কৃষক স্বার্থবাহী প্রস্তাব বিধানসভায় গৃহীত হবে। না আঁচালে বিশ্বাস নেই। আগে অধিবেশন বসুক। তারপর দেখা যাবে এই রাজ্যের সরকার কতটা কৃষিবান্ধব। কেবল কৃষি আইন নয়, জনস্বার্থের অনেক কথা বলার রয়েছে বিধানসভায়। ট্রেন, বাজার মিটিং-মিছিল চালু হলেও বিধানসভার অধিবেশন চালু হচ্ছে না কেন? মুখ্যমন্ত্রী কি বিধানসভা কে ভয় পাচ্ছেন।
Be the first to comment