নাটক এবং সিনেমার এক অপরূপ মেলবন্ধন দেখালো বল্লভপুরের রূপকথা। দর্শক বরাবর থিয়েটারের মঞ্চেই নাটকের অভিনয় দেখে এসেছে। তবে বড়পর্দায় নাটককে জায়গা করে দেওয়ার বুদ্ধি বা দুঃসাহস বোধহয় এর আগে আর কোনও পরিচালকের ঘটেনি। রোজনামচার জীবন চালাতে গিয়ে যখন মানুষ হিমশিম খায়, তখন বোধহয় তাকে পারিবারিক ঐতিহ্যও বিসর্জন দিতে হয়। দেনা-পাওনা, খ্যাতি, প্রেম, বন্ধুত্ব, ব্যবসা এই সবকিছুর মধ্যে কৌতুক এবং ভৌতিক আস্বাদ মিশিয়েই তৈরি এই সিনেমা।
নাট্যকার বাদল সরকারের স্মৃতি অনুসরণ করেই এই অদ্ভুত এক্সপেরিমেন্ট করলেন অভিনেতা এবং পরিচালক অনির্বাণ ভট্টাচার্য। সত্যম ভট্টাচার্যকে বিভিন্ন ছোট বড় কাজে টুকটাক দেখা গেলেও বল্লভপুরের রূপকথা বুঝিয়ে দিয়েছে তাঁর অকৃত্রিম অভিনয় দক্ষতা। একইসঙ্গে একই স্ক্রিনে দুটি চরিত্র রূপায়ণ এর আগে দেখা গেলেও নতুনত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে তাঁর অভিনয়ে। ভূপতি রায় অর্থাৎ সত্যম ভট্টাচার্য রাজ পরিবারের বংশধর হওয়া সত্বেও সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যেতে তাঁর কোনও দ্বিধা নেই। নিজের চরিত্রে মনুষ্যত্বের অন্যরকম নিদর্শন ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। অন্যদিকে ছন্দা হালদার অর্থাৎ সুরঙ্গনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা গেছে বেশ লাজুক অথচ তেজস্বী নারীর চরিত্রে। তবে মনোহর অর্থাৎ শ্যামল চক্রবর্তীর অভিনয় গোটা সিনেমাটিতে ভীষণ তীক্ষ্ণ ভূমিকা পালন করেছে। অন্যদিকে সঞ্জীব বসু অর্থাৎ দেবরাজ ভট্টাচার্য ভূপতি রায়ের বন্ধুর ভূমিকায় বেশ মজার আলোড়ন ঘটিয়েছেন।
বেশ কিছু নতুনত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে এই সিনেমাতে। “সিগারেট ইজ ইঞ্জুরিয়াস টু হেল্থ, ইটস কজেস ক্যান্সার” এই উক্তিটি সংস্কৃত তে প্রথম কোনও সিনেমায় ব্যবহৃত হল। সিনেমার গানগুলিও বেশ অন্যরকম। ইতিমধ্যে “নতুন প্রেমের গান” শ্রোতাদের মন জিতে নিয়েছে। সিনেমার শেষ ভাগে প্রোডাকশনের সঙ্গে জড়িত সমস্ত ব্যক্তিদের এন্ট্রি বেশ মজাদার। বাংলা সিনেমার উন্নয়নের স্বার্থে এ ছবি যে দুর্ধর্ষ নজির রেখেছে, তা বলতেই হবে।
Be the first to comment