ব্যালটেই পুরভোট করানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকারের৷ জানা যাচ্ছে, আপাতত ঠিক হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা শেষ ও রমজান মাস শুরুর আগের মধ্যবর্তী সময়ে ভোট প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। এপ্রিলের শুরুতে কলকাতা, হাওড়া পুরভোট। শেষের সপ্তাহে বাকি পুরসভার ভোট। সব মিলিয়ে দু’-তিন দফায় রাজ্যে পুরভোট হবে।
গত লোকসভা ভোটের ফলাফলের পর ইভিএমের কারচুপি নিয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটে ব্যালট ফেরানোর দাবিতে তিনি ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। সেইসময় পুরভোট ব্যালটে হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা ইতিমধ্যেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির পর চিঠি দিয়ে ভোটের দিনক্ষণ জানিয়ে দেবে রাজ্য পুর-নগরোন্নয়ন দফতর।
গত দেড় দশক ধরে ইভিএমেই পুরভোট হয়ে আসছে। তবে ব্যালটে ভোট করার অভিজ্ঞতা কমিশনের রয়েছে। যে সংখ্যক ব্যালট বাক্স দরকার, তা কমিশনের কাছেই আছে। ফলে নতুন করে তা কিনতে বা জোগাড় করতে হবে না। অতিরিক্ত কাজ বলতে, মনোনয়নপত্র পরীক্ষা শেষে ব্যালট পেপারে প্রার্থীর নাম ছাপানো।
তবে সূত্রের খবর, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কর্তারা নানা ভাবে নবান্নকে বোঝানোর চেষ্টা করছে যে, ব্যালট যাতে আর না ফেরে। যুক্তি হিসেবে বলা হচ্ছে, ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা অনেকটাই নির্ঝঞ্ঝাট। ব্যালট ফেরালে নির্বাচন-কর্মী অনেক বেশি লাগবে। সময় ও খরচ, দুই-ই বেশি লাগবে। সঙ্গে নিরাপত্তার বিষয়টিও রয়েছে। জানা গিয়েছে, ১১০টি পুরসভার ভোটে বুথের সংখ্যা প্রায় ১৮ হাজার। কলকাতা পুরসভাতেই বুথের সংখ্যা ৪ হাজার ৭০০। হাওড়ায় ১২০০। কমিশনের হাতে ২১ হাজার ইভিএম রয়েছে। এর মধ্যে কিছু বাতিল করতেও যদি হয়, সমস্যা হবে না। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন বা প্রতিবেশী রাজ্য থেকেও ভাড়া নেওয়া যাবে। রাজ্য কমিশনের হাতে তুলনায় আধুনিক এম-টু মডেলের ইভিএম রয়েছে প্রায় ১১ হাজার। যা ব্যবহার করা নিয়ে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। লোকসভা ভোটে এই মডেলটির বদলে এম-থ্রি মডেলের ইভিএম ব্যবহার হয়েছিল। কমিশনের বাকি ইভিএমগুলি প্রথম যুগের। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী যেহেতু নিজে ব্যালট চাইছেন তাই নবান্নের কর্তারা এব্যাপারে কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারছে না কমিশনকে।
Be the first to comment