বাংলাদেশে দুর্গাপূজার মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলার প্রেক্ষাপটে ঢাকায় সব ধর্মের প্রতিনিধিরা এক মঞ্চে উপস্থিত হয়ে জানালেন সম্প্রীতির আহ্বান জানালেন বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের আহ্বানে রোববার গুলশানের লেইক শোর হোটেলে ‘শান্তি ও সম্প্রীতির লক্ষ্যে আন্তঃধর্মীয় ঐক্য’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ইসকনের সাধারণ সম্পাদক চারুচন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী বলেন, তরীকত ফেডারেশনের ধর্মীয় ঐক্যের ডাক ‘অত্যন্ত প্রশংসনীয়’।
তিনি বলেন, “ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনার বিচার না হওয়ার সংস্কৃতির কারণে এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে। কুমিল্লার ঘটনার বিচার না হলে এই ধরনের হামলার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে।”
বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনান্দাপ্রিয় বলেন, “ধর্মীয় সম্প্রীতি বাড়াতে হবে। ধর্মীয় নেতাদের ঐক্য এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করি।” ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘নজরদারি’ বাড়ানোর পরামর্শও দেন তিনি।
আওয়ামী লীগের জোট শরিক দলের এই নেতা সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জঙ্গিবাদী মন-মানসিকতার লোক ঘুরে বেড়াচ্ছে। শুধু বিএনপি-জামায়াতের কথা বলে দায় এড়ানো যাবে না। সকল ধর্মের লোকদের যার যার ধর্ম পালন করার সুযোগ করে দেওয়াও সরকারের দায়িত্ব।” নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের।
কুমিল্লার ঘটনার প্রসঙ্গে মাইজভান্ডারি বলেন, “কুমিল্লার ঘটনায় ওসি কোরআন শরিফ হাতে নিয়ে মোবাইল দিয়ে ভিডিও করে দেশ ও জাতির সামনে ঘটনাটিকে হাইলাইট করেছেন। ওসির দায়িত্ব ছিল বিষয়টিকে হাইড করা, যাতে কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলা না হয়। এটা কোরআন শরীফ অবমাননা। ওসির এই ঘটনাও সাম্প্রদায়িক উসকানির মধ্যেও পড়ে। সে যদি দায়িত্বশীল হতে, তাহলে কুমিল্লার পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটত না।”
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, ইসলামী চিন্তবিদ ড. আহসানুল হাদী, মহিলা পরিষদের নেত্রী জয়ন্তী রায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আতাউর রহমান মিয়াজী, জাতীয় পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নির্মল চ্যাটার্জী, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্মল রোজারিও, ইসলামী বক্তা গিয়াস উদ্দীন আত-তাহেরী, জাতীয় পুজা উদযাপণ পরিষদের নেতা মিলন কান্তি দত্ত প্রমুখ।
Be the first to comment