এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ন’টি কর্মী ইউনিয়ন। বুধবার ধর্মঘট করছেন মোট ১০ লক্ষ ব্যাঙ্ককর্মী। ফলে ব্যাহত হচ্ছে পরিষেবা। উৎসবের মরসুমে ভোগান্তি হচ্ছে গ্রাহকদের।
বিজয়া ব্যাঙ্ক এবং দেনা ব্যাঙ্ককে ব্যাঙ্ক অব বরোদার সঙ্গে সংযুক্তিকরণের প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ইউনিয়নগুলি। এর আগে ২১ ডিসেম্বর ধর্মঘট হয়েছে ব্যাঙ্কে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির বেশিরভাগ গ্রাহকদের আগেই জানিয়ে দিয়েছে, বুধবার ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। এর ফলে এটিএম পরিষেবাও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি অবশ্য খোলা থাকবে।
অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সি এইচ বেঙ্কটচলম বলেন, নানা দাবিদাওয়া নিয়ে আমরা অ্যাডিশনাল চিফ লেবার কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেছিলাম। তিনি আমাদের কোনও আশ্বাস দেননি। সেজন্য ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবি, অবিলম্বে বেতন নিয়ে একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে। সেই সঙ্গে ঘোষণা করতে হবে ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ বাতিল করা হচ্ছে। ব্যাঙ্ক ইউনিয়নগুলি মনে করে, প্রস্তাবিত ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণ বাস্তবে রূপায়িত হলেও সরকারের কোনও লাভ নেই। তিনটি ব্যাঙ্ক যুক্ত করে নতুন ব্যাঙ্ক তৈরি হলেও তা বিশ্বের প্রথম ১০টি ব্যাঙ্কের মধ্যে স্থান পাবে না।
গত সেপ্টেম্বরে সরকার ব্যাঙ্ক অব বরোদার সঙ্গে বিজয়া ব্যাঙ্ক ও দেনা ব্যাঙ্ককে যুক্ত করার প্রস্তাব দেয়। যে ব্যাঙ্কগুলি বিপুল পরিমাণ নন পারফর্মিং অ্যাসেট থাকার কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে, সেগুলি সংযুক্তিকরণের মাধ্যমে শক্তিশালী করে তোলা যাবে বলে সরকারের আশা। এই প্রথম তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে যুক্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে। এর আগে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে তার পাঁচটি অনুসারী ব্যাঙ্ককে যুক্ত করা হয়। সেই সঙ্গে স্টেট ব্যাঙ্ক ভারতীয় মহিলা ব্যাঙ্ককে অধিগ্রহণ করে। এর ফলে ওই ব্যাঙ্কটি এখন বিশ্বের সেরা ৫০ টি ঋণদাতা সংস্থায় পরিণত হয়েছে।
ব্যাঙ্ক ইউনিয়নগুলি যাই ভাবুক, তথ্যাভিজ্ঞ মহলের ধারণা, তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণের ফলে দীর্ঘমেয়াদে লাভই হবে। দেনা ব্যাঙ্কের আয়তন খুবই ছোট। বিজয়া ব্যাঙ্ক ও ব্যাঙ্ক অব বরোদার সঙ্গে তা যুক্ত হলে সংযুক্ত ব্যাঙ্কের ব্যালেন্স শিটে এমন কিছু প্রভাব পড়বে না।
২০১৮ সালের শেষ ত্রৈমাসিকে দেশের ৩৮ টি লিস্টেড ব্যাঙ্কের মোট নন পারফর্মিং অ্যাসেটের পরিমাণ ১০.১৭ লক্ষ কোটি টাকা। ২০১৪ সালের মার্চে শেষ হওয়া আর্থিক বছরে দেনা ব্যাঙ্কের নন পারফর্মিং অ্যাসেটের পরিমাণ ছিল ২৬১৮. ০৩ কোটি টাকা। ২০১৮-র মার্চে শেষ হওয়া আর্থিক বছরে তার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬,৩৬১.৪৪ কোটি টাকা। ২০১৪-১৫ সালের আর্থিক বছরে বিজয়া ব্যাঙ্কের নন নন পারফর্মিং অ্যাসেটের পরিমাণ ছিল ১৯৮৫. ৮৬ কোটি টাকা।
২০১৮ সালের মার্চে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫২৬. ০৯ কোটি টাকা। ব্যাঙ্ক অব বরোদার মোট নন পারফর্মিং অ্যাসেটের পরিমাণ এখন ৫৬,৪৮০. ৩৯ কোটি টাকা।
Be the first to comment