ক্রমশ বেড়েই চলেছে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা৷ বরাহনগরে করোনা আক্রান্ত পৌঢ়ের সংস্পর্শে থাকা ২১ জনকে চিহ্নিত করল স্বাস্থ্যা দফতর৷ এঁদের মধ্যে ১৮ জনকে নিয়ে যাওয়া হল রাজারহাটের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে৷ বাকি ৩ জনের জ্বর থাকায় তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে এমআর বাঙুর হাসপাতালে৷ এঁদের প্রত্যেকেই করোনা টেস্ট করা হবে বলে জানা গিয়েছে৷
রবিবার বরানগরের ষাটোর্ধ্ব ওই ব্যক্তির শরীরের COVID19 পজিটিভ পাওয়া যায়৷ কয়েকদিন আগেই করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন লেকটাউনের ড্যাফোডিল নার্সিংহোমে তিনি৷ গতকালই তাঁর শরীরে মেলে করোনা ভাইরাস৷ সোমবার করোনা আক্রান্ত ওই ব্যক্তিকে লেকটাউনের নার্সিংহোম থেকে অ্যাপোলে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়৷ তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে, এই ভেবে অ্যাপোলেতে নিয়ে হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷
পাশাপাশি লেকটাউনের ওই নার্সিংহোমের করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা করা ডাক্তার ও নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী-সহ মোট ৫ জনকে নার্সিংহোমেই কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ এঁদেরও করোনা টেস্টে করা হবে৷ রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তবেই এই ডাক্তার, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজে যোগ দেবেন৷ আর পজিটিভ এসে তখনও ওনাদের পুরোপুরিভাবে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে বলেও জানা গিয়েছে৷
এদিন বিকেলে রাজ্যের স্বাস্থ্য তফতরের তরফে জানানো হয়, বরানগরের করোনা আক্রান্ত ওই ব্যক্তি সংস্পর্শে আসা ২১ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ এঁদের মধ্যে ১৮ জনকে নিয়ে রাখা হচ্ছে রাজারহাটের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে৷ বাকি তিনজনকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বাঙুর হাতাপাতালে৷ কারণ এই তিনজনের শরীরে জ্বর রয়েছে৷ পাশাপাশি তেহট্টের একই পারিবারের করোনা আক্রান্ত পাঁচ জনের সংস্পর্শে থাকা ৩৯ জনকে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য দফতর৷ এঁদেরও কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে বলে জানা গিয়েছে৷
সোমবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে জানানো হয়, ভারতে করোনার সংক্রমণ ‘লোকাল ট্রান্সমিশন’ পর্যায়ে রয়েছে৷ তবে আপাতত বড় পর্যায়ে অর্থাৎ কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয়নি এবং একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ের ট্রান্সমিশন হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও সেটা সীমিত৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সচিব লাভ আগরওয়াল বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত আমরা কমিউনিটি শব্দটা ব্যবহার করছি না৷ কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হচ্ছে কিনা, তা এখনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷’
করোনা সংক্রমণের চারটি পর্যায় হয়। প্রথমটি হল স্টেজ-১। অর্থাৎ যাঁরা বিদেশ থেকে সংক্রমণ নিয়ে আসছেন। আর স্টেজ ২ হল লোকাল ট্রান্সমিশন। অর্থাৎ আক্রান্তের আত্মীয় বা পরিচিতের শরীরে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। ভারত বর্তমানে এই দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে।
সোমবার সকাল পর্যন্ত দেশে করেনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১১৭৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের। মহারাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে। ২১৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। সংক্রমণের নিরিখে মহারাষ্ট্রের পরেই রয়েছে কেরল। এদিন সকাল পর্যন্ত কেরলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২০২ জন।
Be the first to comment