বেহাত বিপুল সরকারি জমি, উদ্ধারের আশায় দিন গুণছেন আবাসনের বাসিন্দারা। বিস্তর কাঠখড় পুইয়ে বহুবার অভিযোগ করেও জমি উদ্ধার হয়নি। কিন্তু, সম্প্রতি জমির অবৈধ কারবারীদের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অভিযান শুরু হতেই ফের আশায় বুক বেঁধেছেন তাঁরা। আশায় বুক বেঁধেছেন সোসাইটির নেতা অবসরপ্রাপ্ত মাস্টারমশাইও।
উত্তরকন্যার পাশেই রয়েছে বসুন্ধরা আবাসন। প্রায় ৮.৬৪৫ একর জমিতে গড়ে উঠেছে দুটি ব্লক। A ব্লকে রয়েছে ৬০ টি বাড়ি। B ব্লকে আছে ৮০টি বাড়ি। ২০০৪ সালে হাউজ়িং দপ্তর থেকেই বাড়িসহ এই জমি বিক্রি করা হয়। সরকারি কাগজপত্র অনুযায়ী, এই জমির বিনিময়ে ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা দিয়েছিলেন আগ্রহীরা।
এরপর ওই এলাকায় দুই কাঠা জমির ওপর দুটি ব্লক মিলিয়ে মোট ১৪০টি বাড়ির মালিকানা আগ্রহীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, বাকি ১৪ বিঘা জমির মালিকানা আজও নানা জটিলতায় বসুন্ধরা আবাসনের সদস্যরা পাননি।
এলাকার বাসিন্দা পূরণ শর্মা বলেন, “স্থানীয় প্রভাবশালীরাই আবাসন বিভাগের জমিতে বাইরের লোকদের বসিয়েছেন। দোকান, ঘরবাড়ি তৈরি হয়ে গেছে। বেহাত হয়ে গেছে জমি। পুলিশে একাধিকবার অভিযোগ করেও লাভ হয়নি কিছুই।”
আবাসনের বাসিন্দা মিহির কুমার বোস বলেন, “এই ১৪ একর জমিতে সোসাইটির পার্ক ও কমিউনিটি হল ইত্যাদির পরিকল্পনা ছিল। A ব্লকে আমরা পার্ক বানিয়েছি। কিন্তু B ব্লকে পার্কের জমি বেহাত হয়ে গেছে। আমরা চাই হাউজ়িং বোর্ড দ্রুত আমাদের বরাদ্দ জমির মালিকানা আমাদের হাতে তুলে দিক। এবং মাপজোক করে সেই জমি আমাদের দখলে দিয়ে দেওয়া হোক। এতদিন আশা ছিল না। কিন্তু, চতুর্দিকে জমির অবৈধ কারবারীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে। আশাকরি এখানেও যারা এই দখলদারদের পিছনে রয়েছে সেই আসল মাথারা গ্রেপ্তার হবে। জমির অবৈধ দখলদারদের সরিয়ে আমরা জমির মালিকানা ফিরে পাব।”
শুধু বসুন্ধরা আবাসনের এই জমিই নয়, হাউজ়িং দপ্তর সূত্রে খবর আশপাশে বিস্তীর্ণ এলাকায় দপ্তরের হাতে কাগজেকলমে ১৫০ একর জমি থাকার কথা থাকলেও সেই জমির খোঁজ মিলছে না। অধিকাংশ জমিই দখল হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মদতে। এ নিয়ে সার্ভের কাজ চলছে। নাম না প্রকাশের শর্তে এক আধিকারিক জানান, শাসকদলের এক নেতার কাণ্ডকারখানা সকলেই জানেন। আমরা রিপোর্ট তৈরি করে জমা দিয়েছি। এই মুহূর্তে বিস্তীর্ণ জমিগুলি কী অবস্থায় আছে তা সার্ভে হলেই সামনে আসবে। সরকার এরপর সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের যা হিসাব তাতে বিপুল পরিমাণ এই জমি অন্তত কোটি কোটি টাকায় জবরদখল হয়েছে শুধুমাত্র গায়ের জোরে এবং প্রভাবশালীদের মদতেই।
মন্ত্রী গৌতম দেব জানান, জমি জবরদখল ও অবৈধভাবে বিক্রি বরদাস্ত করা হবে না। তদন্তে এসব সামনে এলে মদতদাতারা কেউ ছাড় পাবে না।
Be the first to comment