বুধবার রাত থেকেই উত্তপ্ত বেহালার চড়কতলা। তৃণমূল কংগ্রেসের আদি বনাম নব্য দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গন্ডগোল থেকেই এই ঘটনার সূত্রপাত বলে অভিযোগ। এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সামনে গত রাত থেকে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় এখানে। চলে বোমাবাজি এবং গুলিও। এই ঘটনায় পুলিশ ন’জনকে আটক করেছে ৷
স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতে শুরু হয় দু’পক্ষের সংঘর্ষ। ইট ছোড়া, ভাঙচুর দিয়ে শুরু হলেও পরে গুলি চলতে শুরু করে। বেহালা থানার পুলিশ এলেও ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তখনও গুলি চলেছে। এখানে চড়ক মেলা হয়। সেই মেলার কমিটির দায়িত্ব কার হাতে থাকবে, তা নিয়েই দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের অভিযোগ, বেধড়ক মারধরের পাশাপাশি গাড়ি, মোটরবাইক, স্কুটি–সহ একাধিক গাড়িতে চলে ভাঙচুর। ভাঙচুর চালানো হয় তৃণমূল পার্টি অফিসেও। ভেঙে দেওয়া হয় সিসি ক্যামেরা, জানালার কাচ। সংঘর্ষের আঁচ গিয়ে পড়ে স্থানীয় কিছু বাড়িতেও। বাড়িও ভাঙচুর করা হয়। আর ভাঙা হয় বাইক। ১০টি বাড়ি ও বেশ কয়েকটি গাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে, ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
অবশেষে বেহালা থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে এলাকায়। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনার পিছনে কী কারণ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, চড়কমেলাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এলাকা। বেহালার চড়কতলায় এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে। আদি বনাম নব্য ক্ষমতার দখল কার হাতে থাকবে, তাই নিয়েই লড়াই। সর্বত্রই ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে লড়াই চলছে। তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে প্রত্যেকদিন কোনও না কোনও ঘটনায়। যদিও এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
এদিকে এই ঘটনার পর বাবান বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক তৃণমূল নেতার নেতৃত্বে ঘাসফুলের কর্মীরা পথ অবরোধ করেন ৷ বাবান বন্দ্যোপাধ্যায় আবার অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায়, লালটু ও ভাস্কর নামে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন ৷ তাঁর দাবি, ‘‘আমরা এই কাজ করিনি ৷ অর্ণব, লালটু ও ভাস্কররা প্রোমোটারি করে ৷ তাই এলাকা দখলের জন্য এই কাজ করছে ৷ আমাদের মিথ্যেভাবে জড়ানো হচ্ছে ৷ পুলিশের সামনে তারা নিজেরাই ভাঙচুর চালায় ৷ কিন্তু আমাদের এই ঘটনায় ফাঁসানো হচ্ছে ৷
Be the first to comment