রোজদিন ডেস্ক :- বৃহস্পতিবার তক্তাঘাটে ছটপুজোর অনুষ্ঠানে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জানান বিহারের চেয়ে বাংলায় বেশি ছটপুজো হয়। এদিনের ভাষণে বাংলার পরম্পরা ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরেন তিনি। বাংলা যে সব ধর্ম, বর্ণের মানুষের জন্য অবারিত দ্বার, সেকথা আরও একবার মনে করিয়ে দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাজ্যের অনেক জায়গাতেই ছটপুজো হয়। বাংলার পরম্পরা আছে, গৌরব আছে, সৌরভ আছে। এখানে সবাই সব ধর্মের উৎসবকে নিজেদের উৎসব মনে করে। আমরা নিজেদের মতো করে পালন করি। আমাদের সরকার ছটপুজোতে দু’দিন ছুটি দিয়েছে, যাতে আপনারা ভালভাবে পুজো করতে পারেন।’
এদিন ছট পুজোর সন্ধ্যায় কলকাতার তক্তাঘাটে ছট পুজোর উদ্বোধনে এসে তিনি বড় বার্তা দিলেন এ রাজ্যে বসবাস করা হিন্দিভাষী সেই সব মানুষদের যারা শুধু ছটপুজোয় সামিল হয়েছেন তাই নয়, যারা বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, দিল্লি, হরিয়ানা, গুজরাত, মহারাষ্ট্র থেকে এখানে এসে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন তাঁদেরও। এদিন মুখ্যমন্ত্রী কলকাতার বুকে নানান স্থানে গড়ে তোলা ১৫টি ছট পুজোর ঘাট উদ্বোধন করেন। সেই সঙ্গে বার্তা দেন, ‘শুধু বিহারে ছট পুজো হচ্ছে না, বাংলারও সব জায়গায় হচ্ছে। আপনারা মনে করবেন না যে আপনারা একাই উপবাসে আছেন। ছট পুজোতে আমিও ব্রত রেখেছি। আমার নামে আগামীকাল গঙ্গাসাগরে পুজো হবে। বিহারের চেয়েও বাংলায় বেশি ছট পুজো হয়।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন একদিকে যেমন বাংলাকে তুলে ধরেছেন তেমনি অন্যদিকে ভিন রাজ্য থেকে আসা মানুষজনদের কাছেও আবেদন জানিয়েছেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে এ রাজ্যে আছেন তাঁরা যেন এই রাজ্যকেই তাঁদের নিজ রাজ্য মনে করেন। তিনি বলেন, ‘ধর্ম, ভাষা, বর্ণ- নির্বিশেষে বাংলা হল বিবিধের মিলনস্থল। বাংলার পরম্পরা চিরকাল বজায় থাকবে। তাই আপনাদের উৎসবও, আমাদের উৎসব। আমাদের সরকার ছট পুজোয় দুদিন ছুটি দিচ্ছে। স্বাধীনতার লড়াইয়ে বাংলার অবদান সবথেকে বেশি। বাংলায় আছেন মানে বাংলাই আপনাদের ঘর। বাংলার সব সুযোগ সুবিধা পাবেন। এখানে বিভাজনের রাজনীতি আমরা বরদাস্ত করব না। আমরা সব ধর্মকে ভালবাসি। সে কারণেই তো বিহারের চেয়েও এখন বাংলায় বেশি ছট পুজো হচ্ছে। মনে রাখবেন বাংলায় আছেন মানে বাংলাই আপনাদের ঘর।’
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘হিন্দুদের এই পুজো মূলত বিহারি সম্প্রদায়ের মধ্যে হয়ে থাকে। বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, নেপালের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও এখন সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে ছট পুজো। সকলে ভাল করে উৎসব কাটান। কোথাও যেন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না হয়। বেলেঘাটার গান্ধি ভবন ভালো করে বানিয়ে দিয়েছি। দইঘাট ভালো করে বানিয়ে দিয়েছি। আপনারা শুনলে খুশি হবেন, এবারে ছট পুজো নিয়ে আমি গান লিখেছি, ছোটি মাইয়া। আগামীকাল সকালে কলকাতার সব ঘাটে সেই গান শুনতে পাবেন। পুজোর জন্য গঙ্গাঘাটে তাড়াহুড়ো করবেন না। ছোট ছোট গ্রুপ করে করে ধীরে ধীরে ঘাটে যাবেন। কেউ তাড়া দিলেও তাড়াহুড়ো করবেন না। ওতে পদপিষ্ট হয়ে যেতে পারেন। কোনও দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, সেদিকে সকলকে নজর রাখতে হবে।’ মুখ্যমন্ত্রীর গান এদিন বিকাল থেকেই কলকাতায় গঙ্গার ঘাটে ঘাটে শোনা যাচ্ছে।
Be the first to comment