কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে মঙ্গলবার আস্থা ভোট হল ভাটপাড়া পুরসভায়। আগের দিনের মতোই সেই ভোটে ১৯-০ ব্যবধানে জিতল তৃণমূল। আস্থা ভোটে এলেনই না বিজেপির কাউন্সিলররা। সেই সঙ্গে বিজেপির ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ফাল্গুনী পাত্র জানালেন, ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা।
গত বৃহস্পতিবার মহানাটক দেখেছিল ভাটপাড়া। সকালে আস্থা ভোটে ১৯-০ ব্যবধানে বিজেপিকে হারিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল। শুরু হয়ে গিয়েছিল উৎসব। কিন্তু তা ছ’ঘণ্টাও স্থায়ী হয়নি। বিকেলে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিন্দম সিনহা ওই আস্থা ভোট খারিজ করে দেন। জানিয়ে দেন, ভাটপাড়ার ভবিষ্যৎ পুর আইন মেনে ঠিক হবে। পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা আদালত বলে দেবে।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি প্রতীকপ্রকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেছিল তৃণমূল। কিন্তু বৃহস্পতিবারের রায়ের কপি তৃণমূল জমা না দিতে পারায় মামলা খারিজ করে দেয় আদালত। বিকেলে মামলার কপি নিয়ে একই ডিভশন বেঞ্চে শুনানির আবেদন করেন আইনজীবী তথা তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই আবেদন গ্রহণ করে আদালত। সোমবার সেই শুনানির শেষে ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, মঙ্গলবার হবে আস্থা ভোট।
এদিন জেলা শাসকের উপস্থিতিতে আস্থা ভোট নেন পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার। ভাটপাড়া পুরসভার মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৩৫টি। অর্জুন সিং সাংসদ হওয়ার পর কাউন্সিলর পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। মৃত্যু হয়েছে ভীম সিং নামের এক কাউন্সিলরের। একটি ওয়ার্ড দখলে রয়েছে বামেদের। ফলে এই মুহূর্তে বোর্ড গড়তে দরকার ১৭ জন কাউন্সিলরের সমর্থন। পাঁচজন কাউন্সিলর দল বদল করেননি। তাঁরা তৃণমূলেই রয়ে গিয়েছিলেন। মাঝে পুরনো দলে ফেরেন ১২জন কাউন্সিলর। শাসকদলের বক্তব্য, বোর্ড গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা তাদের আছে। গত বৃহস্পতিবার তা প্রমাণ করেছিল তৃণমূল। এদিন ফের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করল শাসক দল। কাঁচরাপাড়া, হালিশহর, বনগাঁর মতো উত্তর চব্বিশ পরগনায় আরও একটি পুরসভা এল শাসকদলের হাতে।
চেয়ারম্যান সৌরভ সিং অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য বৈঠকের তারিখ ঘোষণা করেছেন। বলা হয়েছে ২০ জানুয়ারি ওই বৈঠক হবে। সেখানেই ঠিক হয়ে যাবে কার পক্ষে কত সংখ্যা। কিন্তু অত দিন অপেক্ষা করতে রাজি ছিল না তৃণমূল। তিন কাউন্সিলর চিঠি দিয়ে আস্থা ভোট নিতে বলেন এক্সিকিউটিভ অফিসারকে। কিন্তু বিজেপির বক্তব্য, চেয়ারম্যান হিসেবে সৌরভ সিং যখন তারিখ ঘোষণা করেছেন, তখন আর কেউ অন্য দিন বৈঠক ডাকতে পারেন না। এখন দেখার সুপ্রিম কোর্টে কবে যায় বিজেপি। কী রায় দেয় শীর্ষ আদালত।
Be the first to comment