অতীতে যা হয়নি তাই এবার করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচন হোক বা উপনির্বাচন ৷ অভিজাত ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশকে ভোটের লাইনে দাঁড় করানো যায়নি। আর সে কারণেই ভবানীপুরের সমস্ত ভোটে সব সময় সমস্যা কম পোলিং পার্সেন্টেজ। এবার রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস চাইছে সেই সংস্কৃতিতে বদল আনতে। আর তাই ফ্ল্যাট তথা বহুতলকে মাথায় রেখেই ভোট কৌশল ঠিক করছে তৃণমূল । যাতে এতদিনের কম পোলিং পার্সেন্টেজের বদনাম ঘোচানো যায়। শুধু তাই নয়, তৃণমূল কংগ্রেস জানে যদি ভবানীপুর এলাকার সমস্ত বহুতলের বাসিন্দাদের ভোট কেন্দ্রমুখী করা যায় তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রেকর্ড মার্জিনে জয় সম্ভব। আর সে কারণেই তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা ব্রিগেডকে এই কাজের বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে ময়দানে নামাচ্ছে তৃণমূল।
এবার নির্বাচনে অবাঙালি ভোটব্যাঙ্ককে নিয়ে আলাদা করে ভাবনা চিন্তা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি নিজেই অবাঙালি ভোটারদের নিয়ে বৃহস্পতিবার সভা করবেন বলে খবর। একইভাবে তিনি চাইছেন, দলের মহিলা কর্মীরা বহুতলগুলিতে গিয়ে বহুতলের বাসিন্দাদের ভোটকেন্দ্রমুখী করতে আগ্রহী করে তুলুন। এক্ষেত্রে নির্দিষ্টভাবে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিন একথা বলতে চাইছে না দল বরং তাঁরা বলবেন, আপনারা নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করুন।
তৃণমূলের কৌশল অনুযায়ী, দলের মহিলা ব্রিগেডকে এই বহুতলগুলিতে পাঠাবে তারা ৷ একএকটি দলে থাকবেন পাঁচজন করে মহিলা কর্মী। বহুতলগুলির বাসিন্দারা সরকারি সব প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন কি না, তা জানার চেষ্টা করবেন ওই মহিলারা ৷ বাসিন্দাদের অভাব অভিযোগও শুনবেন তাঁরা ৷ তৃণমূল সূত্রে খবর, শুধু বিধানসভা নির্বাচন নয়, আগামী দিনে পুরভোটেও এই তথ্যগুলি ব্যবহার করতে পারবে শাসকদল ৷
রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতৃত্বের কথায়, “নির্বাচন আমাদের জন্যে নতুন কিছু নয় বরং অন্য রাজনৈতিক দলগুলির থেকে এক্ষেত্রে শাসকদল অনেক ভাল অবস্থায় আছে। আর ভবানীপুরের ক্ষেত্রে যেটা বরাবরের সমস্যা এখানে একটা বড় সংখ্যক মানুষ যে কোনও নির্বাচনেই ভোটদান প্রক্রিয়াকে এড়িয়ে যান। আমরা চাইছি, তাদের সঙ্গে একটা সম্পর্ক গড়ে তুলতে। যাতে তারা ভোটদান কেন্দ্রে আসতে আগ্রহী হন। তারপর তাদের মতো করে ভোট দেবেন ৷ তাতে আমাদের কিছু বক্তব্য নেই।
দলের আরেক শীর্ষ নেতা সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, “ঠিক যেভাবে দুয়ারে সরকার চলছে, সেভাবেই মানুষের দুয়ারে দুয়ারে যাবে আমাদের দল ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি শুরু করেছেন, যেগুলি চালু হবে, সেগুলি সম্পর্কে মানুষকে জানাবেন তাঁরা ৷ দুয়ারে তৃণমূলই নির্বাচনে আমাদের প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে চলেছে ৷”
ভবানীপুর বিধানসভা নির্বাচনের বিচারক মণ্ডলীর মধ্যে অন্যতম কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মমতা যেখানে ঘরের মেয়ে সেখানে আলাদা করে প্রচারের কিছু নেই। এক্ষেত্রে মানুষের কাছে পৌঁছে সরকার বিগত সময় কী উন্নয়ন করেছে সেটা তুলে ধরার চেষ্টা করছি আমরা ৷ এই উন্নয়নের নিরিখে মানুষ ভোট দেবেন। সেক্ষেত্রে আমরা জনতার রায় মাথা পেতে নেব।
তিনি আরও জানান, এক্ষেত্রে সাধারণ নেতা-মন্ত্রীরা যেমন বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করছেন, একইভাবে দলের কর্মী সমর্থকদের নিয়ে ছোট ছোট পথসভা করা হবে। এমন কিছু পথসভায় উপস্থিত থাকবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অতএব এটা ভাবনার কারণ নেই, জিতে গেছি ভেবে আমরা চুপ করে বসে থাকব বরং আমরা চাইব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের মার্জিনকে আরও বাড়িয়ে নিতে।
Be the first to comment