বিলকিস বানো ধর্ষণকাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে মহুয়া মৈত্রর নাম করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহুয়ার ভূয়সী প্রশংসা করলেন মুখ্য়মন্ত্রী। মঙ্গলবার জয়নগরের প্রশাসনিক সভা থেকে বিলকিস বানো মামলার প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। মমতা দাবি করেছেন, বিলকিসের ধর্ষকদের ছেড়ে দেওয়ার পর মামলা করেন মহুয়াই। সেই মামলায় জয় মিলেছে, যা কার্যত তৃণমূলের জয় বলেই মানছেন সুপ্রিমো।
আজ মমতা বলেন, “বিলকিস বানো মামলায় ধর্ষকদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের দলের মহুয়া মৈত্র যিনি সাংসদ ছিলেন, ওকে জোর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে উনি মামলা করেছিলেন। সেই মামলার একটি পক্ষ ছিলেন মহুয়া। এটা কিন্তু তৃণমূলেরই জয়।”
এ দিন, অপরাধ প্রসঙ্গে মুখ খোলেন মমতা। তিনি অভিযোগ করেন, কেউ কেউ তাঁকে নাকি বলেছেন গুন্ডাদের নেত্রী তিনি। মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়েছেন তিনি কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন না। বলেছেন, “আমরা ধর্ষকদের প্রশ্রয় দিই না। মানুষকে বিচার দিই আমরা।”
২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গার সময়কালে গণধর্ষিত হন বিলকিস বানো। সেই সময় ৫ মাসের গর্ভবতী ছিলেন বিলকিস। তাঁর চোখের সামনেই ৩ বছরের কন্যা সহ পরিবারের ৭ সদস্যকে কুপিয়ে খুন করা হয়। আদালতের দ্বারস্থ হন বিলকিস। ২০০৮ সালে মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই কোর্ট অভিযুক্তদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ১৫ বছর কারাবাসের পর, ১১ আসামীর মধ্যে একজন সুপ্রিম কোর্টে মুক্তির আবেদন করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট ঠেলে দেয় তা গুজরাট সরকারের কোর্টে। এরপর একটি কমিটি গঠিত হয়। ২০২২ সালে স্বাধীনতা দিবসের দিন গুজরাট সরকার অভিযুক্তদের মুক্তি দেয়।
গুজরাত সরকারের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপিকা রূপরেখা বর্মা, সিপিএম-এর সুভাষিণী আলি, সাংবাদিতক রেবতী লাউল। রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে ফের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিলকিস বানো। তখন সাংসদ ছিলেন মহুয়া। তিনি নিজেও একটি পৃথক জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন। এরপরই ১১ জন ধর্ষকের মুক্তি আটকায় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আজ সেই প্রসঙ্গ তুলেই মমতার ভূয়সী প্রশংসা করেন মহুয়ার।
Be the first to comment