রাজ্য ও রাজ্যপালের সংঘাত নতুন নয়। সংঘাত এতই চরমে পৌঁছেছে যে রাজ্যপালের পদ থেকে জগদীপ ধনখড়কে সরাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আর্জিও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর হাওড়া পুরসভা বিল নিয়ে যখন রাজ্য বারবার তোপ দেগেছে, তখন বুধবারই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল দাবি করেছেন তাঁর কাছে কোনও ফাইল আটকে নেই। কোনও কাজ বাকি নেই বলেই দাবি করেছেন তিনি।
তবে এবার রাজ্যপালের সেই দাবি নস্যাৎ করে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, ফাইল আসেনি বিধানসভায়। শুধু তাই নয়, জগদীপ ধনখড়কে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে অধ্যক্ষের দাবি, কেউ আরটিআই করলেই এ বিষয়ে আসল তথ্য জানাবে রাজ্য সরকার।
বুধবার রাজ্যপাল ফাইলের বিষয়ে মন্তব্য করার পর বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাফ জানান, কোনও ফাইল আসেনি রাজভবন থেকে। তিনি বলেন, ‘আমি ক্লান্ত ওনার উত্তর দিতে দিতে।’ তাঁর দাবি, বিধানসভার কোনও বিল যদি রাজ্যপালের কাছে যায়, তাহলে বিলের কী পরিনতি হল সেটা প্রথম বিধানসভাতেই আসবে, তারপর অন্য কোথাও যাবে। অধ্যক্ষ কার্যত বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘কী করে উনি এই কথা বলছেন! আমি অবাক হয়ে গেলাম।’ রাজ্যপালকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে অধ্যক্ষ বলেছেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে, দফতর আছে। কেউ আরটিআই করুক আমরা উত্তর দিয়ে দেব।’
রাজ্য ও রাজ্যপালের সংঘাত নতুন নয়। বিভিন্ন বিষয়েই বারবার মতের অমিল সামনে এসেছে। তবে, সম্প্রতি হাওড়া পুরসভা বিল নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। গত ১২ নভেম্বর বালিকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো বিধানসভা অধিবেশনে বিল আনা হয়। ‘মাইক্রো লেভেলে নাগরিক পরিষেবা’ পৌঁছে দিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে রাজ্য সরকারের তরফে বলা হয়। কিন্তু বিল পাশ করানো হলেও রাজ্যপালের সই ছাড়া তা আইন হিসেবে গণ্য হচ্ছে না।
বিধানসভা সূত্রে জানা যায়, এখনও কোনও বিলে সই করার খবর তাদের কাছে নেই। বিল সই হলে বিধানসভায় আসে। কিন্তু এখনও সেই সই করা বিল বিধানসভায় আসেনি।
বুধবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল সাফ জানান, তাঁর টেবিলে কোনও ফাইল পড়ে নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি নস্যাৎ করে তিনি জানান, কোনও কাজ ফেলে রাখেননি তিনি। তাঁর দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যেমন খুশি অভিযোগ করে চলেছেন তাঁর বিরুদ্ধে। আর সেই বক্তব্য মানতে নারাজ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
Be the first to comment