বিধানসভায় এবার শাসকদলের বিধায়কদের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বিধায়কদের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিলেন। বিধানসভায় হই-হট্টগোলের জন্য বিরোধী দলের পাশাপাশি তৃণমূল বিধায়কদেরও ভূমিকা কিছু কম নয় বলে মনে করেন তিনি। স্পিকারের বক্তব্য, বিরোধী-শাসক কারওরই এভাবে প্ল্যাকার্ড হাতে অধিবেশনের সমস্যা করে বিক্ষোভ দেখানো উচিত নয়।
বৃহস্পতিবার নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলতার সাক্ষী ছিল রাজ্য বিধানসভা। অধিবেশনের আগে দেখা গেল তৃণমূল বিধায়করা বড় বড় পোস্টার নিয়ে হাজির বিধানসভায়। সেসব পোস্টারে লেখা, ‘ডোন্ট টাচ মাই বডি, আই অ্যাম মেল, মোদিজির ইঞ্চি ছাতির Tale।’ কোনওটায় লেখা ‘ডোন্ট টাচ মাই বডি, আই অ্যাম মেল, অল ইওর পলিসিস উইল ফেইল’, ‘আচ্ছে দিনের সরকার ইজ এ ফেয়ারিটেইল, ডোন্ট টাচ মাই বডি, আই অ্যাম মেল।’ সেই সঙ্গে তৃণমূল বিধায়কদের পালটা স্লোগান, ‘চোর চোর চোরটা। শিশিরবাবুর ছেলেটা।’ তাঁদের সকলের টার্গেট যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, তা বুঝতে আর বাকি নেই। তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রর প্রশ্ন,’বিরোধী রাজনীতি করতে গেলে এভাবে ছুঁয়ো না ছুঁয়ো না করলে হয় না। উনি কি মেয়ে না ছেলে সেটা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী নন?’ পালটা বিজেপির অগ্নিমিত্রা পল অভিযোগ করেন, ‘এটা অত্যন্ত নিম্নমানের রাজনীতি। আমারদের দল এই ধরনের রাজনীতি করতে শেখায়নি।’
এসবের জেরেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্পিকার। বিধানসভায় বারবার এহেন হট্টগোল নিয়ে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ”দরকারে আমি কঠোর হতে পারি। বিরোধী-শাসক কারওরই এভাবে প্ল্যাকার্ড নিয়ে অধিবেশনে সমস্যা করে বিক্ষোভ দেখানো উচিত না। শাসকদের তো আরও বেশি দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। বিরোধীরা তো এসব করছেই। হাউস বিলং টু অপোজিশন। বিরোধীরা তো করবেই। সরকার পক্ষের থেকে এ রকম প্রত্যাশা করা যাচ্ছে না।’’ বিধি ভেঙে বিধানসভায় হট্টগোল করলে শাসক দলকেও ‘কড়া বার্তা’ দিতে পিছপা হবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘কারও এ ধরনের আচরণ করা উচিত না। সরকার পক্ষের তো বিশেষ করে বিরত থাকা উচিত।’’
তবে বিধানসভা চত্বরের বাইরে কোনও রাজনৈতিক শত্রুতা কিংবা ঘটনা নিয়ে তিনি মন্তব্য করতে চাননি। ব্যক্তিগত আক্রমণ নিয়েও কিছু বলতে নারাজ স্পিকার। বিরোধীদের যেমন প্রতিবাদ করার অধিকার আছে, তেমনই শাসকদলেরও তা আছে বলে মনে করছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
Be the first to comment