বীরভূমে মনোনয়ন ঘিরে ভিন্ন ছবি। একদিনে বোলপুরে এসডিও অফিসে বোমা-বাজি ফাটিয়ে ফুটবল নিয়ে এসে মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছে তৃণমূল, অন্যদিকে, বিজেপি প্রার্থীদের তালাবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আধ ঘণ্টা যখন হাতে সময় আর মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার, ততক্ষণ ‘তালাবন্দি’ই হয়ে থাকলেন বিজেপি প্রার্থীরা। শেষমেশ শাটার খুলে প্রার্থীদের উদ্ধার করেন বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়।
বুধবারই ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। মনোনয়ন জমা দেওয়ার কেন্দ্রের বাইরেই একটি ঘরে কাজ করছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগে চলছিল শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। অভিযোগ, সে সময় তৃণমূল আশ্রীত দুষ্কৃতীরা সেই ঘরে ঢুকে পড়েন। হামলা করে, ভয় দেখিয়ে বাইরে থেকে শাটার বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ বিজেপি প্রার্থীদের।
হাতে তখন আর মাত্র ৩০ মিনিট সময়। একদিকে যখন ঢাক বাজিয়ে ধুমধাম করে মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থীরা, তখন অন্যদিকে ‘শাটারবন্দি’ হয়ে থাকলেন বিজেপি প্রার্থীরা। অন্তত তেমনটাই অভিযোগ উঠছে। ঘটনায় নিগৃহীত বিজেপি প্রার্থী বলেন, “আমাদের এখানে কাজকর্ম চলছিল। তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা এসে আমাদের ওপর হামলা করে শাটার বন্ধ করে দিয়ে চলে যায়। আমরা ভয় পাচ্ছি বেরিয়ে আসতে। আমাদের তো কোনও নিরাপত্তা নেই। পুলিশ প্রশাসন তো কোনও কাজই করে না। পুলিশ প্রশাসনকে বলা আছে। কিন্তু এখানে ফোর্স কই। আমরা এখানে মনোনয়নপত্র দিতে এসেছিলাম। কিন্তু আমরা যতটা ভয় পেয়েছি, আমরা মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছি না।”
তবে পুলিশের কিন্তু অন্য বক্তব্য। পুলিশ জানাচ্ছে, খবর পেয়ে তাঁরা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছন, তখন ঘরের ভিতরেই ছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। দরজা বাইরে থেকে তালাবন্দি ছিল না। ভিতর থেকে লক ছিল। পুলিশের সামনেই বিজেপির অভিযোগ, বাইরে শাসকদলের কর্মী সমর্থকরা রয়েছেন, তাঁরা প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। তাই তাঁরা বের হতে ভয় পাচ্ছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় রাজ্য ও জেলা কমিটির নেতারা।
পুলিশকে বাইরে রেখেই বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় শাটার খুলে ভিতরে ঢোকেন। প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। বাইরে তখন পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে সিভিক ভলেন্টিয়াররাও ছিলেন। বেলা তিনটেয় মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল। পৌনে তিনটে পর্যন্তও চলে এই গোলমাল। শেষমেশ সময় পেরিয়ে যায়। শাটার খোলার পরও তাঁরা আলোচনাতেই থেকে যান।
ঘটনার প্রেক্ষিতে বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বে বাংলায় জঙ্গলরাজ চলছে। এখানে গণতন্ত্র নেই। মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দিল না ওরা। তালাবন্দি করে রেখে দিল। এমনটাও হয় বাংলায়। মানুষ দেখছে, মানুষই এর জবাব দেবে।” শাসকদলের তরফ থেকে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, সম্পুর্ণ মিথ্যা ভিত্তিহীন অভিযোগ। হেরে যাওয়ার ভয়ে নাটক করছেন বিজেপি প্রার্থীরা।
অন্যদিকে, অবশ্য বোলপুর শহরের বিজেপির সহ-সভাপতি সুনীল ভকতের উপস্থিতিতে ২০ নম্বর ওয়ার্ডের শম্পা হাজরা, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সঞ্জয় মাহাতো, এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মনি জোয়ারদার বিজেপির হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
Be the first to comment