প্রত্যেক দিনের বায়নাক্কা। নেশার জন্য টাকা দিতেই হবে। যদি তা না দেন, তাহলেই বিপদ। চুলের মুঠি ধরে চলত এলোপাথাড়ি মার। তবুও শুক্রবার সকালে সব মাত্রা ছাড়াল। বাড়ির দলিলই চেয়ে বসেছিলেন স্বামী। দিতে রাজি হননি স্ত্রী। পরিণতি মৃত্যু। বীরভূমের সাঁইথিয়ার মাঠপলসা গ্রামের এই ঘটনার ক্লাইম্যাক্স একেবারেই ব্যতিক্রমী।
চার বছর আগে শেখ মহম্মদকে ভালোবাসে বিয়ে করেছিলেন আয়েশা। প্রথমে সম্পর্কে রঙ ছিল। কিন্তু বছর খানেক ধরেই ফিকে হয়েছে সেই রঙ। ড্রাগের নেশা গ্রাস করে সংসারের সর্বসুখ। শেখ মহম্মদ নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। নেশার জন্য কাজ চলে যায় তাঁর। জমানো টাকা থেকে নেশা করতে থাকেন তিনি। এই নিয়ে নিত্যদিন অশান্তি হত তাঁদের। কিছু যে একটা দুর্ঘটনা ঘটবেই, তা আঁচ করতে পেরেছিলেন প্রতিবেশীরাও। শুক্রবার সকালে সেই আশঙ্কা সত্যি হল। নেশার টাকা জন্য বাড়ির দলিলটাই চেয়ে বসলেন শেখ মহম্মদ। তা দিতে রাজি হননি আয়েশা। অশান্তি চরমে ওঠে। আচমকাই আয়েশার আর্তনাদ শুনতে পান প্রতিবেশীরা। ছুটে যেতেই ঘর থেকে বেরিয়ে যান মহম্মদ। খাটের ওপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে দেখেন আয়েশার শরীর। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা।
সাঁইথিয়ার মাঠপলসা গ্রামের এই ঘটনা এখানেই শেষ নয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই আরও একটা মর্মান্তিক খবর আসে প্রতিবেশীদের কাছে। জানা যায়, রেললাইনে ধারে পড়ে রয়েছে শেখ মহম্মদের ক্ষত বিক্ষত দেহ। প্রথমে চিনতে পারা না গেলেও, পরে তাঁকে শণাক্ত করা হয়। খবর পেয়ে শেখ মহম্মদের দেহ উদ্ধার করে রেলপুলিস।
পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, স্ত্রীকে আঘাতের পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন শেখ মহম্মদ। এরপর রেলালাইনে গিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি। বর্তমানে সিউড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আয়েশা। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
Be the first to comment