বিশাখাপটনমে রাসায়নিক কারখানায় গতকাল গ্যাস লিকের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১২। মৃতদের মধ্যে এক জন শিশুও রয়েছে। এই ঘটনায় উপদেশনামা জারি করল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেখানে এই ধরনের ঘটনায় কী করা উচিত ও কী করা উচিত নয় সে সম্পর্কে জনগণকে বিভিন্ন উপদেশ দেওয়া হয়।
স্টাইরিন একধরনের রঙহীন, দাহ্যযুক্ত তরল। এই তরল পলিস্টাইরিন প্লাস্টিক, রাবার, ও ফাইবার গ্লাস তৈরিতে ব্যবহার হয়। উপদেশনামা অনুযায়ী, এই স্টাইরেন শ্বাস-প্রশ্বাস ও ত্বকের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এই তরলের সংস্পর্শে আসার সাধারণ লক্ষণ হল চোখে, নাকে ও ত্বকে জ্বালা অনুভূত হওয়া। এই তরলের সংস্পর্শে দীর্ঘক্ষণ থাকলে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র, কিডনি সংক্রান্ত সমস্যা -সহ মানসিক অবসাদ ও মাথা যন্ত্রণা হতে পারে। পরবর্তীতে হাঁপানিতেও ভুগতে হতে পারে আজীবন।
উপদেশনামায় বলা হয়, যদি কেউ দুর্ঘটনাক্রমে স্টাইরিনের সংস্পর্শে আসে তাহলে প্রচুর পরিমাণে জল দিতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে । পাশাপাশি চোখ ও ত্বকে কমপক্ষে 15 মিনিট ধরে জলের ঝাপটা দিতে হবে । একইসঙ্গে স্টাইরিনের সংস্পর্শে আসায় জামা ও জুতো খুলে ফেলতে হবে ।
বায়ুতে স্টাইরিনের মাত্রা নির্ধারণের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে বাতাসের নমুনা সংগ্রহ করা যেতে পারে । তারপর বিশেষ স্টাইরিন চিহ্নিতকরণ ডিভাইসের মাধ্যমে বিষয়টির বিশ্লেষণ করা যেতে পারে । বাতাসে স্টাইরিনের পরিমাণ ও গুণ নির্ধারণের জন্য গ্যাস ক্রোমাটোগ্রাফিরও ব্যবহার করা যেতে পারে বলে উপদেশনামায় জানানো হয় ।
উপদেশনামায় বলা হয়, “স্টাইরিন মাটি বা জলে মিশলে দ্রুত বাষ্পীভূত হয়ে যায় । অন্যদিকে বাতাসে মিশলে স্টাইরিন ফোটো কেমিকেলের সঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় হাইড্রক্সিল ব়্যাডিকাল নির্গত হয় । ফলে সেক্ষেত্রে স্টাইরিন বাতাসে একদিনেরও অর্ধেক সময় থাকে ।” পাশাপাশি কারখানার কর্মীদের সরকার বা শিল্পমূলক সংগঠনগুলির তরফে আয়োজিত বিপর্যয় মোকাবিলা কর্মসূচিগুলিতে উপস্থিত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয় । কারখানার কর্মীদের উদ্দেশে উপদেশনামায় বলা হয়, “পরিবার ও প্রতিবেশীদের বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক সম্পর্কে সচতেন করুন । “
গ্যাস লিকের ঘটনা ঘটলে মানুষকে মাথা ঠান্ডা রেখে দ্রুত বেরিয়ে আসার পরামর্শ দেওয়া হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে । বের হওয়ার সময় রুমাল বা কাপড়ের টুকরো ভিজিয়ে মুখে চাপা দিয়ে রাখতেও বলা হয় । পাশাপাশি এই ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক PPE কিটের ব্যবস্থা করে রাখতেও বলা হয় ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের জারি করা উপদেশনামায় এই ধরনের ঘটনার ক্ষেত্রে খোলা রাখা খাবার, জল গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয় । পাশাপাশি সুরক্ষিত জায়গায় পৌঁছানোর পর জামা-কাপড় বদলে নেওয়ার ও হাত ভালো ধোওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয় । একইসঙ্গে জরুরি পরিষেবা পেতে দমকল, পুলিশ ও অ্যাম্বুলেন্সকেও খবর দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয় উপদেশনামায় ।
Be the first to comment