জাতপাত, ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতির অভিযোগ বিজেপি’র বিরুদ্ধে নতুন নয়। এ বার কি সেই মেরুকরণের চক্রব্যুহে নিজেরাই ঢুকে পড়ল গেরুয়া বাহিনী? জলপাইগুড়ির জেলার বিজেপি’র গোষ্ঠী কোন্দলে সেই প্রশ্নই উঠছে বারবার।
ভারতীয় জনতা পার্টির জলপাইগুড়ি সাংগঠনিক জেলায় দলীয় কোন্দল চরম সীমায় পৌঁছেছে। সূত্রের খবর তা থামাতে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে স্বয়ং রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে।
ঠিক কী নিয়ে বিবাদ?
জানা গিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলায় এখন গেরুয়া শিবিরের দুটি গোষ্ঠী। একটি গোষ্ঠীতে রয়েছেন প্রাক্তন জেলা সভাপতি দীপেন প্রামাণিক। অন্য গোষ্ঠীতে রয়েছেন এখনকার জেলা সভাপতি দেবাশিস চক্রবর্তী। দেবাশিসবাবুর সঙ্গে আবার রয়েছেন জেলার আর এক তাবড় নেতা বাপী গোস্বামী। লড়াইটা বেঁধেছে দীপেন বনাম দেবাশিস-বাপীর।
সম্প্রতি জেলার সাতজন মণ্ডল সভাপতি মিলে একটি চিঠি স্বাক্ষর করে পাঠিয়েছেন মূরলীধর সেনের রাজ্য দফতরে। তাঁদের অভিযোগ বর্তমান জেলা সভাপতি সবাইকে নিয়ে কাজ করছেন না। তার থেকেও বেশি, চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের দাবি, বর্তমান জেলা সভাপতি দেবাশিস চক্রবর্তী একজন ব্রাহ্মণ। বিজেপি’র সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত ৮টি বিধানসভা রয়েছে। ডামগ্রাম-ফুলবাড়ি, রাজগঞ্জ, জলপাইগুড়ি সদর, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি, মাল, নাগরাকাটা। মেখলিগঞ্জ কোচবিহার জেলার বিধানসভা হলেও এটি বিজেপি’র সাংগঠনিক জেলা কমিটিরই অন্তর্গত। দীপেন বাহিনীর মণ্ডল সভাপতিরা দিলীপ ঘোষকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, এই আটটি বিধানসভার ৬০ শতাংশ ভোটার তফশিলি জাতি এবং উপজাতিভুক্ত। তাই অবিলম্বে উনিশের ভোটের আগে ব্রাহ্মণ জেলা সভাপতি বদলে দিয়ে নিয়োগ করা হোক এই অংশের জেলা সভাপতি।
সূত্রের খবর এই চিঠি পাওয়ার পরই ওই সাতজনকে গোষ্ঠী কোন্দল পাকানোর জন্য কারণ দর্শানোর নোটিস ধরিয়েছে দল। অন্যদিকে একাংশ যেমন চাইছে দীপেন আবার সভাপতি পদে ফিরুক তেমনই আবার জেলা সভাপতি হিসেবে নাম উঠে আসছে বাপী গোস্বামীর। বাপী গোস্বামী সম্পর্কে আবার দীপেন গোষ্ঠীর অভিযোগ, তিনি শাসক দলের সঙ্গে বোঝাপড়া করে চলেন।
রবিবার বিজেপি’র জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সভাও অনুষ্ঠিত হয়। লোকসভা ভোটের এখন এক বছরও বাকি নেই। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা যখন বাংলা থেকে ফসল তোলার ঘুঁটি সাজাচ্ছেন তখন জলপাইগুড়ি জেলার বিজেপি নেতারা মেতেছেন নিজেদের মধ্যে ঝগড়ায়। আর সমালোচকদের মতে, যার মূল কারণ ব্রাহ্মণ-অব্রাহ্মণ দ্বন্দ্ব।
Be the first to comment