বিজেপির তিন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত, তবে ভোট বাড়ল বামেদের

Spread the love

২ কোটি ২৮ লক্ষ ভোট ৷ বিধায়কের সংখ্যা ৩ থেকে ৭৭ হওয়া ৷ আর বাংলার ৩৭ শতাংশ মানুষের সমর্থন পাওয়া ৷ গত কয়েক মাসে বঙ্গ-রাজনীতিতে নিজেদের ভিত্তি বোঝাতে এই তথ্যগুলি বারবার ফিরে এসেছে বিজেপির ছোট-বড়-মেজো নেতাদের মুখে ৷

গেরুয়া শিবিরের গর্বের সেই বেলুন ফুটো হয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গের চার রাজ্যের উপনির্বাচনের ফলাফলে ৷ চার আসনে সুকান্ত-শুভেন্দুদের দলের ভরাডুবি তো হয়েছেই ৷ সঙ্গে লজ্জা আরও বাড়িয়েছে তিন আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার ঘটনা ৷ দিনহাটা, গোসাবা ও খড়দা-এই তিন বিধানসভা আসনে বিজেপি প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৷ দিনহাটায় অশোক মণ্ডল পেয়েছেন ১১.৩১ শতাংশ ভোট। পলাশ রানা গোসাবায় বিজেপির হয়ে লড়াইয়ে নেমেছিলেন ৷ তিনি পেয়েছেন ৯.৯৫ শতাংশ ভোট ৷ আর খড়দার বিজেপি প্রার্থী জয় সাহার প্রাপ্ত ভোটের হার ১৩.০৭ শতাংশ ৷

ভারতের জনপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুয়ায়ী, ১৬.৬৬ শতাংশ ভোট না পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হয় ৷ সেক্ষেত্রে মনোনয়নের সময় নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হয় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ ফেরত দেওয়া হয় না সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে। আপাতত মুখরক্ষা করেছেন শান্তিপুরের প্রার্থী নিরঞ্জন বিশ্বাস। তিনি ২৩.২২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়নি। যা দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল ধরচক্রবর্তীর বক্তব্য, এই রেজাল্টের প্রভাব অবশ্যই আগামী ভোটে পড়বে। এই ভোটের ফল বলে দিচ্ছে স্থানীয় বিজেপি পায়ের তলার মাটি শক্ত নয় ৷

যদিও বিজেপি এই নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয় ৷ এদিন দলের তরফে সাংবাদিক বৈঠকে হাজির হয়ে বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ এই নিয়ে পালটা প্রশ্ন তুলেছেন ৷ জানতে চেয়েছেন, ভোট আদৌ হয়েছে কি? একই কথা বলেছেন শান্তিপুরের গেরুয়া প্রার্থী নিরঞ্জন বিশ্বাসও ৷ তাঁর আবার দাবি, তৃণমূলের ভয়ে মানুষ ভোট দিতে পারেননি ৷

তবে বিজেপির এই ‘সর্বনাশে’ নিজেদের ‘পৌষমাস’ দেখছে বামেরা ৷ তাদের যদিও সবক’টি আসনেই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৷ তবে আগের থেকে সামান্য ভোট বেড়েছে ৷ আর তাতেই তারা মনে করছে যে হাওয়া ঘুরছে ৷

সামনেই রাজ্যে একের পর এক পৌর নির্বাচন রয়েছে ৷ তার পর ২০২৩-এ পঞ্চায়েত ভোট ৷ এই দু’টি ভোটই বলে দেবে হাওয়া কোন দিকে ঘুরছে? মানুষকে বিজেপিকে ছেড়ে বামেদের দিকে চলে যাচ্ছেন? নাকি শক্তি শুধু তৃণমূলেরই বৃদ্ধি হচ্ছে, বাকিরা ক্রমশ বঙ্গ-রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছেন?

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*